ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন

প্রকাশিত : ১১:০৯ এএম, ১৭ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:০২ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন-দর্শনের সারকথা ছিল মানুষের উন্নয়ন, কোনো গোষ্ঠীবিশেষের উন্নয়ন নয়। কিন্তু তার উন্নয়ন-দর্শনের কোনো লিখিত দলিল নেই। তিনি সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন আর ভাষণ দিয়েছেন। কাজেই তার ভাষণ/বক্তব্য/বিবৃতির গভীরে অনুসন্ধান করতে হবে তার উন্নয়ন-দর্শনের মূল সূত্র। এমন অনুসন্ধান তার কর্ম ও কৃতির মধ্যেও সম্প্রসারিত। অবশ্য তার ৩০৫৩ দিন কারাবাসের কারণে পেয়েছি ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’। তবে কথায় বঙ্গবন্ধুকে যতটা চেনা যায় ততটা আর অন্য কিছুতে নয়। সম্ভবত এ কারণে প্রখ্যাত মার্কিন জীবনীকার বিল অ্যাডলার (Bill Adler) বলেছিলেন, ‘Nothing describes a person better than his words.’ বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের ভাষণে আছে বাঙালির সংগ্রামী ইতিহাস আর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রাথমিক পর্বের কথাগুলো।

বক্ষ্যমান আলোচনার সূত্র নির্দেশ করে প্রধানত তিনটি ভাষণ : ১০ জানুয়ারি ১৯৭২; ১৪ মার্চ ১৯৭২ এবং ২৬ মার্চ ১৯৭৫। লক্ষণীয়, ৭১-এর ৭ মার্চ ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। ১০ জানুয়ারি ’৭২-এর ভাষণে দিকনির্দেশনা ছিল অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের। ওই ভাষণে সর্বমোট ১৫টি দিকনির্দেশনা ছিল। অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন বলতে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও রাজনৈতিক অগ্রগতির কথা বলা হয়েছিল এমন একটি উচ্চারণে : ‘বাংলাদেশের মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে পরে সুখে থাকবে, এটাই ছিল আমার সাধনা’। আরো বলা হয়েছিল, ‘যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায় তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে—পূর্ণ হবে না।’ অর্থাত্ রাজনৈতিক স্বাধীনতার পূর্ণতার স্বার্থে অর্থনৈতিক মুক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। উপরন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক

রূপরেখাটি নির্দেশ করার পাশাপাশি আদর্শিক রাজনৈতিক ভিত্তিটিও নির্দেশিত হয়েছিল এমনভাবে, ‘বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি কোনো ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা (পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদ)। ’৭২-এর ১৪ মার্চ আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর এক সমাবেশে বঙ্গবন্ধু স্লোগানের মতো করে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম দেশ গড়ার সংগ্রাম।’ তুলনীয় তার ৭ মার্চের স্লোগান : ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বলা তো যায়, দুটো স্লোগান একটি অপরটির পরিপূরক। তবে ’৭৫-এর ২৬ মার্চের ভাষণটি ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভাষণটি ছিল বাকশালের বৈপ্লবিক কর্মসূচি চালু করার পর। বাংলাদেশের নতুন পথপরিক্রমার সূচক ছিল বাকশাল। ২৬ মার্চের ভাষণে বাকশালকেন্দ্রিক বঙ্গবন্ধুর নতুন ও বাস্তব উপলব্ধির কথা আছে। প্রধান দিকনির্দেশনাটি ছিল এমনভাবে : ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায় যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না আসে। যদি দুঃখী মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে না পারে, কাপড় পরতে না পারে, বেকার সমস্যা দূর না হয়, তাহলে মানুষের জীবনে শান্তি ফিরে আসতে পারে না।’ উপরন্তু আহ্বান ছিল ‘আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে পায়ের ওপর দাঁড়াতে হবে জাতি হিসেবে।’ লক্ষটি অর্জনের জন্য যে সমাজ বদলের প্রয়োজন আছে তা বঙ্গবন্ধু বিস্মৃত হননি। তিনি বলেছিলেন, ‘এই সমাজের প্রতি চরম আঘাত করতে চাই, যে আঘাত করেছিলাম পাকিস্তানিদের। সে আঘাত করতে চাই এই ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে।’ শুধু সমাজ নয়, প্রশাসনেরও বদল প্রয়োজন ছিল। কাজেই বঙ্গবন্ধুর ডাক ছিল ‘এই ঘুণে ধরা ইংরেজ আমলের, পাকিস্তানি আমলের যে শাসনব্যবস্থা তা চলতে পারে না। একে নতুন করে ঢেলে সেজে গড়তে হবে। তাহলে দেশের মঙ্গল আসতে পারে, না হলে আসতে পারে না। আমি তিন বছর দেখেছি। দেখেশুনে স্থির বিশ্বাসে পৌঁছেছি এবং তাই জনগণকে পৌঁছিয়ে দিতে হবে শাসনতন্ত্রের মর্মকথা।’

বাংলাদেশের আমজনতার কী চাহিদা তার কথাও ছিল এই ভাষণে : ‘আপনারা দুঃখ পান, না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন, আপনাদের গায়ে কাপড় নাই, আপনাদের শিক্ষা দিতে পারছি না। কিন্তু সবচেয়ে বড়ো জিনিস খাদ্য।’ সমাজ ও প্রশাসনের প্রধান সংকট হিসেবে এই ভাষণে চিহ্নিত হয়েছিল দুর্নীতি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল : ‘আপনারা সংঘবদ্ধ হোন। ঘরে ঘরে আপনাদের দুর্গ গড়তে হবে। সে দুর্গ গড়তে হবে দুর্নীতিবাজদের খতম করার জন্য, বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ দুঃখ চলে যাবে। এত চোরের চোর, এই চোর যে কোথা থেকে পয়দা হয়েছে তা জানি না। পাকিস্তান সব নিয়ে গিয়েছে, কিন্তু এই চোরা তারা নিয়ে গেলে বাঁচতাম।’

কীভাবে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজ দমন সম্ভব? ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল : ‘সরকারি আইন করে কোনো দিন দুর্নীতিবাজদের দমন করা সম্ভব নয় জনগণের সমর্থন ছাড়া। ...আজকে আমি বলব বাংলার জনগণকে এক নম্বর কাজ হবে, দুর্নীতিবাজদের বাংলার মাটি থেকে উত্খাত করতে হবে। ... একটা কাজ আপনাদের করতে হবে।’ ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ করে সমাজ বদলিয়ে দেওয়ার ব্যাপক বৈপ্লবিক কর্মসূচি ছিল বাকশাল। জনগণের ব্যাপক ঐক্যের মঞ্চও ছিল বাকশাল। ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল বাকশালের নির্গলিতার্থ এভাবে : ‘কেন সিস্টেম পরিবর্তন করলাম ? সিস্টেম পরিবর্তন করেছি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। সিস্টেম পরিবর্তন করেছি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবার জন্য।’

বঙ্গবন্ধু শুধু কথার মানুষ ছিলেন না, ছিলেন কাজেরও। তার প্রমাণ ’৭১-পূর্ব ও পরবর্তী উভয় পর্বেই ছিল। তবে বাংলাদেশ গড়ার যে দর্শনে বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন তার দুটো পর্ব ছিল :বাকশাল-পূর্ব ও বাকশাল-পরবর্তী। বস্ত্তুত, বাকশাল তার উন্নয়ন-দর্শনে এক পর্বান্তরের অধ্যায়। বাকশাল ছিল সীমিত সময়ের জন্য একধরনের নিরীক্ষাধর্মী জনঐক্য প্রক্রিয়া। প্রক্রিয়া সফলও হচ্ছিল। কারণ বাকশাল যতদিন চালু ছিল ততদিন বাংলাদেশের সব সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তাছাড়া নিহিতার্থের বিচারে বাকশাল এক দল ছিল না, ছিল এক জাতীয় ঐক্যমঞ্চও। একাধিক ব্যক্তিকে বঙ্গবন্ধুৃ আশ্বস্ত করেছিলেন, সময়ের ব্যবধানে তিনি পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যাবেন; কিন্তু সে সময় তাকে দেওয়া হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে তিনি সময় পেয়েছিলেন ১৩১৪ দিন; আর বাকশাল সময় পেয়েছিল ২৩৩ দিন।

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর যা বলার ছিল তার সারাত্সার জেনে নেওয়ার পর প্রশ্ন হলো পাকিস্তানের কারাগারে ২৮৮ দিন বন্দি থাকার পর তিনি যে বাংলাদেশ গড়ার জন্য ১৩১৪ দিন সময় পেয়েছিলেন তখন কী করতে পেরেছিলেন? স্বাধীন হওয়ার পর একটি দেশের জন্য করণীয় থাকে দুটো কাজ—রাষ্ট্র গঠন (state building) এবং জাতি গঠন (nation building)। রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় সদ্য স্বাধীন দেশটির প্রাতিষ্ঠানিক ভিত গড়ে ওঠে। অন্যদিকে জাতি গঠনের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত জাতি হিসেবে গড়ে ওঠে। সুতরাং স্বাধীন দেশের নেতৃত্বের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো এ দুটো প্রক্রিয়ার সফল সূচনা করা। বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধু তা করেছিলেন ; তবে পরিণতির দিকে নেওয়ার জন্য যে সময় দরকার তা তিনি পাননি। ’৭২-এর গোড়ার দিকে পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন প্রকল্পের জন্য চাহিদার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল; এবং যা থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের চিত্র পাওয়া যায়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রয়োজন ছিল মাসিক ২০০,০০০ থেকে ২৫০,০০০ টন খাদ্য; ১০০,০০০ টন সিমেন্ট; ৫০,০০০ টন ঢেউটিন; ৫০,০০০ টন কাঠ; এবং ওষুধসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ২০০,০০০ টন উপরন্ত্ত স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যে অর্থ ছিল তা দিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু তবুও সদ্য স্বাধীন দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার পরিপূরক হিসেবে বেতন কমিশন ঘোষণা করা হয়। সম্পদ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা ৬২ শতাংশ থেকে ১৯৭৭-৭৮-এর মধ্যে ২৭ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত হয়। অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের সূচনা হয় নয় মাসের মধ্যে একটি সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে। উল্লেখ্য, সংবিধান প্রণয়ন করতে পাকিস্তানের লেগেছিল নয় বছর। চরম সম্পদ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ভৌত-অবকাঠামোর উন্নয়নের গতি ও পরিমাণ ছিল সন্তোষজনক। স্বাধীন দেশের উপযোগী করে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য ড. কুদরাত-ই-খোদার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল শিক্ষা কমিশন। প্রশাসনিক সংস্কারের জন্যও ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষার ভিত গড়ে উঠল সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সূচনার মধ্য দিয়ে। লক্ষণীয়, বন্যা ও দুর্ভিক্ষের মতো প্রতিকূলতা সামলিয়ে এই অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ছিল মানুষকেন্দ্রিক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা এবং আদর্শ বাংলাদেশ রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুর এ দুটো অর্জনের পথে আমরা সঠিক নেতৃত্বে এগুচ্ছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত গন্তব্যে পৌঁছে গেছি এমন আত্মতুষ্টি আত্মপ্রবঞ্চনা হবে। বিগত এক দশকে দারিদ্র্যের হার কমেছে অর্ধেক-৪২ থেকে ২১, যা মানুষের অর্জন ও এগিয়ে যাওয়ার সূচক । স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের তকমা অর্জন করেছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধির গড় হার ৮-এর ওপর। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। নন্দিত ভারতীয় অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর বিমুগ্ধ বিস্ময়ের কারণ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশের এই যে বহুমুখী এগিয়ে চলা তার প্রেক্ষাপটে উন্নয়ন বয়ান (development discourse) নিয়ে কিছু কথা আছে। বাংলাদেশের অর্জন প্রবৃদ্ধি (growth ); এখনো চূড়ান্ত উন্নয়ন (development) নয়। তবে প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আর উন্নয়ন মানে সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি (development is growth with equity)। বাংলাদেশের সমাজে এখনো ধনবৈষম্য আছে বা ক্রমবর্ধমান, যা কমাতে হবে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে। উপরন্ত, প্রয়োজন লাগসই উন্নয়ন-কৌশল। দুর্নীতির মহিরুহ আকারে-প্রকারে ক্রমবর্ধমান, যা সামলাতে হবে।

সংস্কৃত প্রবচন আছে : রত্ন কর্ষতি পুরঃ পরমেক/স্তদগতানুগতিকো ন মহার্ঘ্য—অর্থাত্ এক জনই আগে পথ তৈরি করে দেন। পরে সে পথ দিয়ে যাতায়াত করার লোক দুর্লভ হয় না। নেতা শুধু কাঙ্ক্ষিত পথের দিশা দেন না, তিনি পথ তৈরি করে পথপরিক্রমায় গন্তব্যও নির্মাণ করেন। এমন দ্রষ্টা ও স্রষ্টার কৃতিত্ব শুধু বঙ্গবন্ধুর। তৈরি করা পথ দিয়েই শেখ হাসিনা হাঁটছেন এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। ’৭১-এ তার ভূমিকার কারণে ড. হেনরি কিসিঞ্জার বাঙালির কাছে চরম অপ্রিয় একটি নাম। কিন্তু কৃতবিদ্য এ মানুষটির নেতৃত্ব সংক্রান্ত একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করতে হচ্ছে: ‘The task of the leader is to get his people from where they are to where they have not been ’. অর্থাত্ উপযুক্ত সংস্কৃত প্রবচনে যে পথ—গন্তব্যের কথা আছে, এ মন্তব্যেও তাই আছে। পথ ও গন্তব্যের নির্মাণে বঙ্গবন্ধুর ছিল কথা ও কাজের সাযুজ্য, যা আছে শেখ হাসিনারও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য হ্যারল্ড এস গ্রিনের নেতৃত্ব—সংজ্ঞাটি : ‘Leadership is practiced not so much in words as in attitude and in actions’; বা পিটার এফ. ড্রাকারের সমধর্মী মন্তব্য : ‘Management is doing things right; leadership is doing right things.’
লেখক: বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি
অব প্রফেশনাল্স (বিইউপি)

এসএ/