ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১

করোনা ভাইরাস

ডাক্তারদের সুরক্ষা চেয়ে নুজহাত চৌধুরীর আবেগঘন স্ট্যাটাস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৮ এএম, ২৩ মার্চ ২০২০ সোমবার | আপডেট: ১১:৫৩ এএম, ২৩ মার্চ ২০২০ সোমবার

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতী ভাইরাসটি বিশ্বের ১৮৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৫৮৭ জনের। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩ লাখ ৩২ হাজার ১৪৯ জন। এর ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি চিকিৎসকরাও। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের সুরক্ষা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী। একুশে টিভি অনলাইনের পাঠকদের স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

মৃত্যুর বিরুদ্ধে মানুষের শেষ যুদ্ধের একমাত্র সৈনিক তার ডাক্তার। সেই যুদ্ধের পরাস্ত ব্যক্তির শেষ নিঃশ্বাসের তীব্র কষ্টের সময় কেউ পাশে থাকবে না। থাকবে শুধু ঐ ডাক্তার– যাকে কারণে অকারণে আপনারা কসাই ডাকেন, অভিশাপ দেন – মাঝে মাঝে গায়ে হাতও তোলেন। অথচ, শুধু এবার নয় – চিকিৎসাধীন সব মৃত্যুর ক্ষেত্রেই এই কথাটা সত্য যে, শেষ যে মুখটি আকুল হয়ে আপনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে তা কোন একজন ডাক্তারেরই।

ডেল্টা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজেই লড়ছে বাঁচার লড়াই। তার জন্য আপনাদের সহানুভূতি যথার্থ। খালি এর পরে কোন ডাক্তারের গায়ে হাত তোলার আগে মনে রাখবেন এই ডাক্তারের কথা। নিজের হাতকে, মুখকে সামলে নিবেন শেষ নিঃশ্বাসের সময় যেই ডাক্তারের সাথে দেখা হবে- তার সম্মানে- এতটুকুই শুধু অনুরোধ। বলে কি লাভ? ডেঙ্গুর সময়ও বেশ কিছু ডাক্তার মারা গেয়েছেন- কে মনে রেখেছে? ঢাল নেই, তলোয়ার নেই পাঠিয়ে দিয়েছেন যুদ্ধে। ডাক্তাররা সেবার ব্রত নিয়েছেন তা নিশ্চয়।

তাই বলে, আপনার জন্য আত্মহত্যা করার প্রতিজ্ঞা তো করে নাই, তাই না? কি মনে করেন? সব সৈনিক যদি একে একে পড়ে যায়, যুদ্ধ করবেন কাকে নিয়ে? আপনার শেষ যুদ্ধের যোদ্ধার সুরক্ষার জন্য সকলে দায়িত্বশীল হন। কর্তৃপক্ষের উচিৎ নয় নির্দিষ্ট সুরক্ষাকারী পোশাক ছাড়া ডাক্তারদের এমন রোগী দেখতে বাধ্য করা। ডেল্টা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ অন্যায় করেছেন। আর জনসাধারণের কাছে দাবী – স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে উপসর্গগুলো – সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাস কষ্ট – এগুলোতে ভুগছে এমন রোগীদের করোনার জন্য করে দেয়া নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলো ছাড়া আর কোথাও নিয়ে যাবেন না। আবারও বলছি, জীবন-মরণের এই যুদ্ধের মূল যোদ্ধা ডাক্তারদের সুরক্ষা দিন। না হলে কারো শেষ রক্ষা হবে না।

একে//