ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

নিরাপদ পণ্যক্রয় নিশ্চিত করছে স্বপ্ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৮ এএম, ২৪ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৪০ এএম, ২৪ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

এসিআই লজিস্টিক লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির

এসিআই লজিস্টিক লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির

বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কোথাও এখন আর মানুষ নিরাপদ নয়। জীবন ধারনের জন্য মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে প্রতিনিয়তই বাইরে বের হতে হচ্ছে। এতে করোনা শংকায় পড়ছে মানুষ। শুধু কী তাই, আমরা যে দ্রব্যটি কিনছি সেই দ্রব্যটি কি করোনা মুক্ত? সেটা নিয়েও রয়েছে মানুষের নানা প্রশ্ন।

ক্রেতাদের নিরাপদ ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করছে এসিআইয়ের অন্যতম উদ্যোগ দেশের বৃহত্তম রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’। এসব বিষয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এসিআই লজিস্টিক লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির।

গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নিশ্চিতে স্বপ্ন কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, আমরা কৃষক পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহের পর চাল তৈরি করে বিক্রি করে থাকি। হঠাৎ করে চালের চাহিদা বৃদ্ধিতে আমরা সে পরিমাণ ধান সংগ্রহ করতে পারছি না। এ কারণে এখন ডিলারের কাছ থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চালের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছেন ডিলাররা। তাই বেশি টাকা দিয়ে চাল কেনার কারণে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা চালের ডিলারদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। এছাড়া ক্রেতারা যাতে বেশি চাল মজুদ করে না রাখতে পারে, সেজন্য একজন ক্রেতা পাঁচ কেজির বেশি চাল নিতে পারবে না, এমন নিয়ম চালু করে দিয়েছি। আমরা সব ধরনের ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে কাজ করছি।

তিনি বলেন, পণ্যের মান নিশ্চিতে আমাদের শক্ত একটি টিম কাজ করে। তারা প্রতিনিয়ত স্বপ্নের পণ্যে মান নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় রেখে আমরা মাংস বিক্রি করি। উৎস পর্যায়ে শাকসবজি সংগ্রহ করা হয় ভালো মানের দেখে। আউটলেটে প্রবেশের আগে আবার দেখে নেয়া হয় পণ্যের মান ঠিক আছে কিনা। কোনো সবজি পচে যাচ্ছে কিনা, সেটাও আমরা দেখি।

নিত্যপণ্যের চাহিদা অনুযায়ী যোগান নিশ্চিতে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে অবশ্যই ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী জোগান নিশ্চিত করব। তবে যেসব এলাকা থেকে আমরা চাল বা অন্য পণ্য নিয়ে আসি; সেসব এলাকা লকডাউনের মধ্যেও যাতে পণ্যবাহী গাড়ি ঢাকায় আসতে পারে, এ ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। যেমন কুষ্টিয়া, দিনাজপুর থেকে চাল আসে। এসব এলাকায় লকডাউনের সময় অবশ্যই পণ্যবাহী গাড়ি আসতে দিতে হবে। সরকার যদি সে ব্যবস্থা না করতে পারে, তাহলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সরকারের উদ্দেশে বলব, লকডাউনের মধ্যেই সারা দেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসার সুবিধা রাখতে হবে। এর মধ্য দিয়েই দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আমরা যারা সুপারশপ ব্যবসায়ী, তাদের সঙ্গে সরকারের বসা উচিত।

ক্রেতা ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে সাব্বির হাসান নাসির বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বপ্নের আউটলেটগুলোর সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। স্বপ্নের ক্রেতা ও কর্মীদের নিজের হাত পরিষ্কার করে ভেতরে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে হাতে গ্লাভস ও মুখে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জনসমাগম যাতে না তৈরি হয়, সেজন্য কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছে। আমরা আমাদের কর্মী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে।

স্বপ্নে অনলাইনে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিক্রি বেড়েছে কিনা জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থায় অফ লাইনের মতো অনলাইনেও স্বপ্ন সুপারশপের বিক্রি বেড়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে যদি সরকার দেশ লকডাউন করে দেয়, সেটা মাথায় রেখে আমরা আমাদের কর্মীর মাধ্যমে নিত্যপণ্য ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। অনলাইন ও হোম ডেলিভারি টিমকে আরো শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এখনো বাংলাদেশে অনলাইন মার্কেটে বেচাকেনা অনেক কম। তরুণরা কিছুটা আগ্রহ তৈরি করেছে। মধ্য বয়সীরা এখন এ বিষয়ে ততটা আগ্রহী নয়।

করোনার প্রভাবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাব্বির হাসান নাসির বলেন, স্বপ্ন সবসময় অন্যান্য ব্যবসায়ীর চেয়ে কম দামে ক্রেতাদের হাতে পণ্য তুলে দেয়ার চেষ্টা করে। যদি ডিলার পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না। হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে গেলে আমরা এসব পণ্য ডিলার থেকে নিয়ে আসি। তারা যদি দাম বৃদ্ধি করেন, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। সেক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে ডিলার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ রাখা।