ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

প্রবাসীদের সহায়তা করতে বাংলাদেশ মিশনগুলোকে নির্দেশনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৯ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

করোনা মোকাবিলায় সহায়তা, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ মিশনগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

করোনা পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের সহায়তার কূটনীতিতেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলো জানিয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত কারও ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও সমস্যা নেই। তাদের ভিসা নবায়ন করা হবে। মিশন থেকে সংশ্নিষ্ট দেশগুলোর পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ কখনই কাউকে অবৈধভাবে কোনো দেশে যেতে কিংবা অবস্থান করতে উৎসাহ দেয় না। যারা নানাভাবে প্ররোচিত হয়ে অবৈধভাবে গেছেন এবং অবস্থান করছেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই এখন সমস্যায় আছেন, বেকার হয়ে পড়েছেন, এটা সত্য।

তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেন তারা দেখাশোনা করেন, ভালোমন্দের খোঁজ রাখেন, জরুরি প্রয়োজনে সহায়তা করেন, সব সময় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখেন।

সূত্র জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা দ্রুত বিস্তারের কারণে প্রবাসীরা প্রথম দিকে দেশে চলে আসতে উৎসাহী হন। সে সময় তাদের নিরুৎসাহিত করা হলেও অনেকেই দেশে এসেছেন। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আছে এমন কেউ দেশে আসতে চাইলে তাকে আটকানো যায় না। এ কারণে তাদের আসতে দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম সংক্রমিত হয় বিদেশফেরত প্রবাসীর মাধ্যমেই। এ কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদেশ থেকে যেই আসবেন, তার জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর বাংলাদেশ থেকে যেসব গন্তব্য দিয়ে বেশি যাত্রী আসেন, সেসব গন্তব্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে প্রবাসীদের ব্যাপক হারে দেশে আসার পথ বন্ধ হয়।

সূত্র জানায়, এ অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন প্রবাসী অনেকের ওয়ার্ক পারমিট শেষ হতে পারে। এক্ষেত্রে মেয়াদ বাড়াতে বাংলাদেশ মিশন সহায়তা করবে। কেউ কেউ নির্দিষ্ট মেয়াদের ভিসা নিয়ে কাজের জন্য গিয়ে আসতে পারেননি, তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে সহায়তা দেওয়া। এ ছাড়া অন্য কোনো জরুরি সহায়তার প্রয়োজন হলে সেটিও যথাসম্ভব নিশ্চিত করবে মিশন। সহায়তার জন্য করোনায় বেশি আক্রান্ত দেশের মিশনগুলোতে হটলাইন চালু করা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, চীনসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এখন কূটনীতির মূল প্রসঙ্গ হচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই ও কীভাবে সহায়তা পাওয়া যায় এবং কতটা সহায়তা নিশ্চিত করা যায়। চীন থেকে করোনা পরীক্ষার কিট নিয়ে আসাসহ অন্যান্য সহায়তার জন্য সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছে। যাতে যে কোনো মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

বর্তমানে পুরো ইতালি লকডাউন। সবাই ঘরে বন্দি। এ অবস্থায় চাইলেও দূতাবাসের পক্ষে সবার খোঁজ রাখা কতটা সম্ভব তা বলা কঠিন। তবে দূতাবাসের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছেন।

ইতালি প্রবাসী একজন জানান, যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের ক্ষেত্রেই বড় সমস্যা। কারণ তারা সে দেশের সরকারি কোনো সুবিধা পাবেন না। জরুরি কেনাকাটার জন্য বের হলেও তাদের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের কাছে কেউ ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা পাঠাতে চাইলেও ঝুঁকি রয়েছে। কারণ ইতালির আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে যারা অবস্থান করছেন, তাদের বৈধ অভিবাসীরাও সহায়তা করতে পারবেন না। এ আইন প্রায় ইউরোপের প্রত্যেক দেশেই আছে। এ কারণে দূতাবাসের পক্ষেও অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের সহায়তা করা প্রায় অসম্ভব। তারপরও ইতালি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে তাদের সহায়তা দেওয়ার জন্য।