কারা অধিদফতরে খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৪১ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২০ বুধবার
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর কারা অধিদফতরে রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল। ফলে সরকারের দেয়া শর্তের ভিত্তিতে যেকোনো সময় মুক্তি পেতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
কারা সূত্র জানায়, সাজা বাতিলের ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়। সেখানে স্বরাষ্ট্র সচিবের স্বাক্ষরের পর কারা অধিদপ্তরে যায়। কারা অধিদপ্তর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করবে। সেই কাগজ নিয়ে বিএসএমএমইউতে গিয়ে খালেদাকে মুক্তি দেবেন জেল সুপার।
আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, ফাইলটি আমাদের কাছে এসেছে। তাকে মুক্ত দেয়ার আনুষ্ঠানিকতা চলছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী জানান, কারা অধিদপ্তর থেকে আমাকে ফোন দেয়া হয়েছিল। আমি কাগজটি নিতে অধিদপ্তরে যাচ্ছি।
এদিকে যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার সেই শর্ত ভঙ্গ করলে তা বাতিল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করতে পারে বলেও মতামত দেন অ্যাটর্নি জেনারেল
এরআগে, গতকাল মঙ্গলবার দুই শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছয়মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শর্ত দুইটি হলো- এই সময়ে তাঁর ঢাকায় নিজের বাসায় থাকতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করার শর্তে এবং এই সময় বিদেশে গমন না করার শর্তে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি মতামত দিয়েছি। সেই মতামত এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে গেছে।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হচ্ছে, আইনি প্রক্রিয়ায় এই দুই শর্তসাপেক্ষে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য।’ তিনি বলেন।
এর আগে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল তাঁর পরিবার। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেছিলেন, তারা তাদের চিঠিতে প্যারোলের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু লেখেননি।
একইসাথে তিনি উল্লেখ করেছেন, এখন তাঁর বোনের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়া হলেও তাদের পরিবারের সদস্যদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
তবে পরিবারের অন্য একটি সূত্র এবং সরকারি সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের চিঠিতে মানবিক কারণে সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়েছে।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। তার মধ্যে গত ১১মাস ধরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
২০০৮ সালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ মামলা দায়ের হয়।
দশ বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে মামলার রায়ে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। তবে পরে হাইকোর্ট সেই সাজা বাড়িয়ে দশ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এমবি//