কমতে পারে করোনার তীব্রতা: এমআইটি গবেষক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৪ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২০ শনিবার
তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও আর্দ্রতায় করোনা ভাইরাসের তীব্রতা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাস্যাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির দুই গবেষক। গবেষণা সাইট এসএসআরএন এ প্রকাশিত গবেষণায় তারা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ৯০ শতাংশ করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে ৩৭ থেকে ৬৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এবং একটি নির্দিষ্ট আর্দ্রতায়। এই অঞ্চলের বাইরেও ছড়াচ্ছে তবে তার তীব্রতা খুব কম।
উদাহারণ হিসেবে তারা বলেন, আমেরিকার নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন রাজ্যে যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তার তুলনায় টেক্সাস এবং ফ্লোরিডার মতো উষ্ণ অংশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা কম।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজারের মতো মানুষ। ওই করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রতিষেধক তৈরি ও করোনার প্রকোপ হ্রাসের ক্ষেত্রে চলছে বিস্তর গবেষণা।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলম্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের জলবায়ু ও স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের পরিচালক জেফ্রি শমন বলেছেন, করোনা ভাইরাস বিভিন্ন তাপমাত্রায় কেমন আচরণ করে এবং কিভাবে ছড়ায় তার পরিসংখ্যানগত গবেষণা অনুসন্ধান গবেষণাগারে করা হচ্ছে। যেখানে প্রায় ১০ হাজার তথ্য ও উপাত্ত রয়েছে।
ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল এই সপ্তাহে নিষ্ক্রিয় করোনভাইরাস কণাগুলি নিয়ে কাজ শুরু করছে। ওই ভাইরাসের পূর্ণ আরএনএ নেই এবং তারা সংক্রামক নয়। বিভিন্ন পরিবেশে ওই ভাইরাসগুলো কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তা নির্ধারণ করার জন্য গবেষণা চালাচ্ছে ওই বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক দল।
বেশ কয়েকটি প্রাথমিক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় করোনা ভাইরাস কেমন আচরণ করে, সে সম্পর্কে গবেষণা চলছে মাত্র। তবে আসন্ন ঋতু পরিবর্তনের ফলে করোনা ভাইরাসের ধীরে ধীরে প্রকোপ কমতে পারে।
একাধিক প্রাথমিক গবেষণায় করোনা ভাইরাস বিকাশ লাভ করা ওই অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থান ও তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা পরিসীমা বিচার বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও এই গবেষণাগুলির কোনওটিই সমকালীন পর্যালোচনা করা হয়ন।
তারা সকলেই একই সাধারণ সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, গ্রীষ্মের মাসগুলিতে মহামারিটি উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের কিছু অংশে হ্রাস পেতে পারে। যদিও এটি পরে শরৎকালে আবার ফিরে আসতে পারে।
মার্কিন জাতীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট (এনআইএআইডি) এর পরিচালক এবং হোয়াইট হাউসের করোনভাইরাস টাস্কফোর্সের কর্মকর্তা অ্যান্টনি এস ফৌসি বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, করোনা মহামারী ঋতুচক্রে আবর্তিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়া সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানের মতো দেশগুলোতে করোনা না ছড়ানোর কারণ নিয়েও বিচার বিশ্লেষণ চলছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, অনেক উত্তপ্ত দেশগুলিতেও করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এগুলো ছড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে এ সংখ্যা তীব্র বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে গরম এবং আরও বেশি আর্দ্র জায়গাগুলির মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে এবং উত্তপ্ত দেশগুলির মধ্যে সংক্রমণ ক্লাস্টারের বেশ কয়েকটি উদাহরণও রয়েছে।
তবে এখনো নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না ঠিক কোন তাপমাত্রায় ও আর্দ্রতায় করোনা ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।
আরকে//