ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাংলাদেশি তরুণের তৈরি করোনা অ্যাপসের বিশ্ব জয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২০ সোমবার | আপডেট: ১০:০০ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২০ সোমবার

নাভিদ মামুন

নাভিদ মামুন

মহামারি করোনা একের পর এক প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সারা বিশ্বের মানুষ করোনা বিষয়ক তথ্য পেতে নানা মাধ্যমে চেষ্টা করছে। টেলিভিশন, পত্রিকা, অনলাইন এমনকি স্যোশালমিডিয়ায় চোখ রাখছে অগণিত মানুষ। বিশ্বব্যাপী এই মহামারির খবর এক ক্লিকেই পেতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছাত্র নাভিদ মামুন তৈরি করেছে একটি অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতি দুই মিনিট পর পুরো পৃথিবীর করোনা পরিস্থিতির আপডেট তথ্য পাওয়া যাবে।

বর্তমানে অ্যাপটি ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ব্যবহার হচ্ছে। সংবাদ সংগ্রহে ইলেকট্রনিক মিডিয়া এই অ্যাপ কাজে লাগাচ্ছে। বাংলাদেশি ছাত্রের এমন আবিষ্কারে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম তার সাক্ষাৎকার প্রচার করছে। 

বর্তমানে অ্যাপটি ফেসবুক-টুইটারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অ্যাপের ব্যবহার খুবই সহজ। স্পর্শ করলেই সঙ্গে সঙ্গে আপডেট চলে আসে। তবে এর তথ্য সংগ্রহে ওয়ার্ল্ডমিটারের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

নাভিদ মামুনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। তার দাদা প্রয়াত ভাষা সৈনিক আবদুস সামাদ। নাভিদের বাবা ওবায়দুল্লাহ মামুন লেখক ও আলোকচিত্রী। তারা নিউ ইয়র্কে থাকেন। নাভিদ কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। নতুন এই অ্যাপটি তৈরিতে তাকে সহযোগিতা করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্পেন বংশোদ্ভূত গ্যাব্রিয়েল রাসকিন।

নাভিদের মা নাজনীন বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করার জন্যই নাভিদ এই কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজেক্টের অংশ হিসেবেই কাজটি করা। অ্যাপটি এখন সারা বিশ্বে সাড়া জাগিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম তার সাক্ষাৎকার প্রচার করছে।’

এদিকে বাংলাদেশেও করোনা নিয়ে একটি অ্যাপ তৈরি করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ কাওছার। ‘টুমোরোস ওয়ার্ল্ড (কোভিড-১৯)’ নামে নতুন এই ওয়েব সফটওয়্যার করোনাভাইরাস থেকে নিজেদেরকে আগাম সতর্ক করবে।

এ বিষয়ে আহমেদ কাওছার একুশে টিভিকে বলেন, আমাদের কাজটি হচ্ছে করোনা ভাইরাস নিয়ে। এখন করোনা ভাইরাস এত দ্রুত হারে বাড়ছে যে, এর ভবিষ্যত কি হবে কেউ বুঝতেছে না। তাই কয়েকদিন ধরে আমরা ভাবছিলাম সেটির সঠিক রেটটা কিভাবে বের করব। শুরু হলো আমাদের গবেষণা। একে একে অর্ডিনারি মেশিং লার্নিং, ডিপ লার্নিং, স্ট্যাটিস্টিক্যাল এলগোরিদম ব্যর্থ হওয়ার পর একটি নিউ এলগোরিদমের কথা চিন্তা করলাম। যেই চিন্তা সেই কাজ। প্রোপোজড করে ফেললাম একটি নতুন নন-প্যারামেট্রিক স্ট্যাটিস্টিক্যাল এন্ড অনলাইন মেশিং লার্নিং এলগোরিদম। যার নাম দিলাম "লার্নিং ফর টুমোরো"। এই এলগোরিদম নিয়ে সামনে আরও কাজ করা হবে ইনশাল্লাহ। 

আহমেদ কাওছার আরও বলেন, আমাদের এলগোরিদমটি মূলত যে কাজটি করবে তা হচ্ছে- আগামী ৭-১০ দিন পর করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কতো হতে পারে, কয়জন মানুষ মারা যেতে পারে, আর কয়জন সুস্থ হতে পারে- এগুলোর ধারনা দিবে। যাতে আমরা সবাই ৭-১০ দিন আগে থেকে সচেতন হতে পারি, আর ভবিষ্যতের জন্য করণীয়গুলো ঠিক করে নিতে পারি। তখন আমরা করনোর বিরুদ্ধে লড়ায় করতেও সক্ষম হবো। 

নোবিপ্রবির এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমাদের এলগোরিদমটি প্রথমে প্রতিদিনের ডাটার উপর বেস করে লার্নিং করবে। যেমন আজকের ডাটার উপর সে লার্নিং হবে এরপর আগের ডাটার রেটের সাথে একটি সম্পর্ক করবে এবং একটি ফাংশন দাঁড় করাবে। যেটি এমনভাবে তৈরি হবে যাতে ইররটা সবচাইতে কম হয়। তারপর সে প্রেডিকশন করবে ৭-১০ দিনের করোনার অবস্থা কি হবে। এই প্রেডিকশনটা আমাদের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য অনেক বেশি সাহায্য করবে। যাতে আমরা করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হই। আপতত আমরা সেটির ২টি ভার্সন করেছি। একটি পুরো ওয়ার্ল্ডের জন্য অন্যটি বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্র আমাদের বড় প্রবলেম হচ্ছে ডেটা এত কম যে, মাত্র ২০-২২টা ডেটা দিয়ে ভবিষ্যত বের করা খুবই কঠিন। তবুও আমারা করেছি যাতে প্রতিদিন এলগোরদিমটি লার্নিং করতে পারে।

ওয়েব সফটওয়্যারের লিংক-
https://sites.google.com/view/kowsher/tomorrows-world-covid-19?authuser=0

আমরা প্রোগ্রামটি সবার জন্য একটি ওয়েব সফটওয়্যার আকারে ওপেন করে দিয়েছি। যাতে যে কেউ সেখানে গিয়ে ভবিষ্যতের একটি ধারণা পাবে, আর নিজেই পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারবে। 

এসি