মানব জাতির অদম্য কর্মশক্তি ও সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে
কোন রোগই হার মানাতে পারেনা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩৫ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২০ সোমবার
গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেল আহমেদ বলেছেন, সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। এ যুদ্ধে এখন আমরা এমন একটি পর্যায়ে উপনীত হয়েছি, যখন আমাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। জাতির এ দুর্যোগময় মূহুর্তে প্রাইম ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপগুলো আপনাদের জানানো প্রয়োজন মনে করছি।
ভাইরাসের সংক্রমণের খবর আসার সাথে সাথে প্রাইম ব্যাংক সম্মানিত গ্রাহক, কর্মীবাহিনী ও সর্বোপরি সমাজের মানুষকে রক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সবার আগে আমরা প্রস্তুত হতে পেরেছি। তাই আমরা এখন গ্রাহক, কর্মীবাহিনী ও অংশীজনদের সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শ মেনে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে পারছি।
আমরা উপলদ্ধি করতে পেরেছিলাম সংক্রমণ রোধে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউনের মত পদক্ষেপ হতে পারে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতেও যাতে গ্রাহকদের প্রাত্যহিক ব্যাংকিং সেবা বিঘ্নিত না হয়, কর্পোরেট গ্রাহকদের ব্যবসা, আমদানি-রপ্তানি, কর্মচারীদের বেতন প্রদানে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য কন্টিনজেন্সি প্লান ও বিজনেস কন্টিনিউটি প্লান আগেই তৈরি করে রেখেছিলাম। প্রধান কার্যালয় ও রিজিওয়ন ভিত্তিক কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আইটি, কলসেন্টার, ডাটা সেন্টার, সিআরএম এর মত অতীব গুরুত্বপূর্ণ অফিসের জন্য ইতিমধ্যেই ব্যাকআপ অফিস তৈরি করা হয়েছে।
শাখায় আসা এড়িয়ে গ্রাহকরা যাতে দৈনন্দিন ব্যাংকিং করতে পারেন সেজন্য অ্যাল্টিচিউড - ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কল সেন্টার (১৬২১৮), ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড এবং এটিএম এর সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। প্রাইম ব্যাংক এটিএম থেকে দৈনিক টাকা উত্তোলন সীমা এক লাখ টাকায় উন্নিত করা হয়েছে। প্রায়োরিটি ব্যাংকিং মোনার্কের গ্রাহকরা দুই লাখ টাকা পয´ন্ত উত্তোলন করতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইউকে, হংকং ও সিঙ্গাপুরে অবস্থিত আমাদের সাবসিডিয়ারিগুলো গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও প্রাইম ব্যাংক পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্টসহ অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদির আমদানী ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু কর্মকর্তাদের বাসা থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক শাখা ও অফিস চালু রাখা হয়েছে। এসব অফিসে ওয়ার্ল্ড হেলথ্ অর্গানাইজেশনের (WHO) ও আইইডিসিআর (IEDCR) এর গাইডলাইন অনুযায়ী যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। কর্মী ও সম্মানিত গ্রাহকদের সুরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপসমূহ:
• অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
• নিরাপত্তার স্বার্থে নগদ টাকা লেনদেনের সাথে নিয়োজিতদের মাস্ক ও গ্লাভস পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
• প্রত্যেকটি শাখা ও অফিস প্রতিদিন জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে। লিফটের বাটন, দরজার হাতল, এটিএম প্যানেল প্রতিনিয়ত পরিস্কার করা হচ্ছে।
• ব্যাংকের শাখায় প্রবেশের সাথে সাথে আগত ব্যক্তিকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
• বাইরে থেকে আসা দলিলাদি ও সামগ্রী জীবাণুনাশকের পরই কেবল অফিসে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
• আমাদের পূর্ব প্রস্তুতির কারণেই আমরা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করতে পারছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল শাখা চালু রাখতে না পারার কারণে আপনাদের সেবা গ্রহণে কিছু সমস্যা হবে পারে। কোন কোন শাখায় চাপ বেশির কারণে লম্বা লাইন হতে পারে, কনট্যাক্ট সেন্টারে লাইন পেতে একটু বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে। লকডাউন পরিস্থিতিতে আমাদের কর্পোরেট ব্যাংকিংয়ের রিলেশনশিপ ম্যানেজার ও সেলসের সহকর্মীরা সম্মানিত গ্রাহকদের অফিসে সশরীরে গিয়ে সেবা প্রদান করতে পারছেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে আপনাদেরকেও আমাদের অফিসে বা শাখায় না এসে যতটা সম্ভব ফোনে সেবা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। আশা করি আপনারা বাস্তবতা উপলদ্ধি করে আমাদের সাথে থাকবেন।
• করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলুন আমরা সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি। কেননা এই দুর্যোগ মুহূর্তে সামাজিক দূরত্ব আমাদের সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
• রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমরা ডাক্তার, নার্স, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কোয়ারেন্টিন তদারককারীসহ অসীম সাহসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে চলুন আমরা নিজেরা সর্তক হই এবং অন্যকে সচেতন করি। আসুন আমরা একে অপরকে সহায়তা করি।
কেননা মানুষ হিসেবে আমাদের শিক্ষা হলো “সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”।
এ দুর্যোগ আমাদের আরও শক্তিশালী করবে। মানব জাতিকে আরও কাছে নিবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতা বাড়াবে।
হার না মানা মানসিকতাই মানুষকে জিতিয়ে দেবে। এই দুর্যোগ কোনভাবেই দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আমরা ঘুরে দাঁড়াবোই।
এই ক্রান্তিকালে আমাদের ভাবনা জুড়ে আছে আমাদের সম্মানিত গ্রাহক ও তাদের পরিবার-পরিজনের মঙ্গল। আমরা আপনাদের এই নিশ্চয়তা দিতে চাই যে, প্রাইম ব্যাংক আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোন ব্যাংকিং সেবা প্রদানে এবং এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। আপনাদের যেকোন ব্যাংকিং প্রয়োজেনে কোন দ্বিধা না করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা সবসময় আছি আপনাদের পাশে।
সবাই ভালো থাকবেন, নিজের ও পরিবারের যত্ন নিবেন। নিরাপদে থাকবেন।
আরকে//