ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

করোনা: চিকিৎসার অর্থ বিলিয়ে দিলেন নাটোরের দম্পতি

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪১ পিএম, ১ এপ্রিল ২০২০ বুধবার

দম্পতি জিয়াউর রহমান ও শিরিন আক্তার

দম্পতি জিয়াউর রহমান ও শিরিন আক্তার

নিজেদের চিকিৎসার জন্য জমানো অর্থ করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় দরিদ্র মানুষদের মাঝে বিতরণ করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়লেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার শিরিন-জিয়া দম্পতি। 

নিজেদের কোনো জমি বা সম্পদ নেই। থাকেন উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায়। রেলের জমিতে স্ত্রী শিরিন আকতার ও দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন জিয়াউর রহমান। বড় ছেলে রাজশাহী পলিটেকনিকেলে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করছে। আর ছোট ছেলে পড়ছে হাফেজিয়া মাদরাসায়। 

একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জিয়াউর রহমান জানান, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার দীর্ঘ আট বছর ধরে হার্ট, কিডনী এবং মেরুদন্ডের অসুখে ভুগছেন। স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য অতি কষ্টে অর্জিত অর্থের কিছু জমা করেন তারা। ওই জমানো টাকায় ভারতে স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। এরই মধ্যে মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ফলে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় তারা ভারতেও যেতে পারছেন না। 

এদিকে করোনা মোকাবেলার যুদ্ধে ঘরে থাকতে গিয়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এসব অসহায় মানুষদের চাপা কান্না তাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। তাই নিজেদের চিকিৎসার জন্য জমানো টাকা দিয়ে সমাজের এসব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই দম্পতি। গত তিন দিন ধরে বাজার থেকে ৫ কেজি করে চাল- আলু, শাক-সবজি, তেল, সাবান কিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে শান্তি লাগছে বলেও জানান জিয়াউর।

অন্যদিকে, আনসার-ভিডিপি'র পৌর ওয়ার্ড লিডারের দায়িত্ব পালন করা শিরিন আক্তার বলেন, মানুষের জন্যই মানুষ। মানবতা সবার আগে, এরপর অন্য কিছু। নিজেরা পেট ভরে খেয়ে শান্তিতে থাকবো আর প্রতিবেশী অসহায় মানুষগুলো না খেয়ে কষ্ট করবে, তা হয় না। এমন অনুভব থেকেই নিজেদের যা আছে তাই দিয়ে মানুষদের সহযোগিতা করছি। 

চিকিৎসার জন্য জমানো অর্থ কেন খরচ করছেন জানতে চাইলে অসুস্থ শিরিন আক্তার বলেন, আগে মানুষ বাচুক, পরে চিকিৎসা হবে।

এনএস/