নড়াইলে চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৩৫ এএম, ৩ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকের সঙ্গে ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের জেরে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ছাত্রী।
লায়লা খানম নামের ওই শিক্ষার্থী লোহাগড়ার ইতনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
আত্মহত্যার আগে লায়লা তার প্রেমিক হাকিম মুন্সীকে (২৪) দায়ী করে আবেগঘন এক চিঠি লিখে যান। তবে হাকিম বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছেন। তিনি একই উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামের গোলাপ মুন্সীর ছেলে।
এদিকে লায়লার মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মা বাদী হয়ে হাকিম মুন্সীসহ তার বাবা গোলাপ মুন্সী ও ভাই লালু মুন্সীকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। তবে অভিযুক্ত হাকিমদের বাড়ির সবাই ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
আত্মহত্যাকারী লায়লার মা মঞ্জু বেগম জানান, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঘরে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। পরে টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। যেখানে লিখা রয়েছে-‘মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্রিয় মা, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। আমার জন্য তোমাকে নানান মানুষ নানান কথা বলছে। শুধু আমার একটি ভুলের জন্য তোমাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে....।’
লায়লার চাচা চান্দু শেখ জানান, ‘প্রতিবেশী সৌদিপ্রবাসী হাকিম মুন্সী সম্প্রতি দেশে আসার পর লায়লার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে তারা দু’জনে অন্তরঙ্গ ছবি তোলে। এরপর মাস খানেক আগে হাকিম সৌদিতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে লায়লার অন্তরঙ্গ ছবিগুলো গত ৩১ মার্চ ফেসবুকে প্রকাশ করে। এসব অন্তরঙ্গ ছবি গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষের নজরে আসার পর কয়েকদিন ধরে লায়লাকে নিয়ে সমাজে নানা ধরণের কটুক্তি চলতে থাকে। একপর্যায়ে লজ্জা, ক্ষোভ ও অভিমানে লায়লা বৃহস্পতিবার সকালে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।’
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘লায়লার ময়নাতদন্ত নড়াইল সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় লায়লার মা বাদি হয়ে হাকিমকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এআই/