ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

ক্রিকেটের ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির জনক আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৬ পিএম, ৩ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার

ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে টনি লুইস (বাঁ থেকে)। ছবি: ইএসপিএন

ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে টনি লুইস (বাঁ থেকে)। ছবি: ইএসপিএন

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ফল নির্ণয়ে বহুল আলোচিত ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির অন্যতম উদ্ভাবক টনি লুইস এমবিই আর নেই।

ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) বরাত দিয়ে ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে তিনি।

বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন লুইস। তার শেষ সময়টা রোগে-শোকেই কাটছিল।

এ বিষয়ে টুইটে ইসিবি জানিয়েছে, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে টনি লুইস এমবিই ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন।’

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে সংক্ষেপে ডিএল মেথড বলা হয়, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত এবং জনপ্রিয় ক্রিকেটীয় পরিভাষা ও পদ্ধতি।

ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সহায়তায় এ পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন টনি লুইস। যে কারণে পদ্ধতিটি দুজনের নামেই রাখা হয়েছে ডাকওয়ার্থ-লুইস।

১৯৯৭ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য এ পদ্ধতি বের করেন লুইস। ১৯৯৯ সালে আইসিসি আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্ধতিটি গ্রহণ করে।

'৯৭ সালের আগে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে রান তাড়া করতে গিয়ে যত ওভার কাটা যেত, প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের সবচেয়ে কম রান ওঠা সেই কয় ওভারের রান বাদ যেত। তাতে মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত সব হিসাব পাওয়া যেত।

ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড উদ্ভাবন হওয়ার আগে এই অদ্ভুত নিয়মের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক দলই। তবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ঘটনাটি ক্রিকেটে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য বেদনাদায়ক ইতিহাসও বটে।

সেদিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি নামার আগে ১৩ বলে ২২ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। বৃষ্টিতে ম্যাচের সময় বেড়ে গেলে পরে দ. আফ্রিকার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১ বলে ২১ রান। অথচ ১ বলে ৬ রানের বেশি করা যায় না। ফলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে প্রোটিয়ারা।

কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড প্রয়োগ করলে ওই খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের জন্য ৫ রান করলেই হতো।

ইতিহাস বলছে, ডার্কওয়ার্থ-লুইস মেথডের প্রথম প্রয়োগ ঘটে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে।

সেদিন জিম্বাবুয়েকে ২০০ রানে অলআউট করা ইংল্যান্ড ৪২ ওভারে লক্ষ্য পেয়েছিল ১৮৬ রানের। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে জিম্বাবুয়ে ৭ রানে জয়ী হয়।

কীভাবে কাজ করে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড?

স্বাভাবিকভাবে খেলা শেষ না হলে কিংবা কোনো ফল না এলে এ পদ্ধতি অনুসরণ করে ফল নির্ধারণ করা হয়।

নিয়মানুযায়ী, বৃষ্টিবিঘ্নিত ক্রিকেট ম্যাচে পরে ব্যাট করা দলের লক্ষ্য কত হতে পারে তা মেথডটির ফর্মুলা দিয়ে নির্ধারণ করা হয়।

স্বচ্ছ এবং সঠিক পদ্ধতি হিসেবে প্রথম দলের রানকে ঘিরে পরবর্তী সময় ব্যাটিং করা দলকে পুনরায় জয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা প্রদান করা হয়।

লুইসের এ পদ্ধতিটি পরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও ব্যবহার শুরু হয়। তবে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন লুইসের এ পদ্ধতির হিসাব হালনাগাদ করে কিছুটা পরিবর্তন আনেন।

এর পর থেকে এতে তার নামও জুড়ে দেয়া হয়। সেদিন থেকে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির নাম পরিবর্তন করে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন বা ডিএলএস পদ্ধতি রাখা হয়।

এমবি//