করোনা উপসর্গ নিয়ে ২ জনের মৃত্যু
মাগুরা ও সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:৫৬ পিএম, ৩ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার
করোনার উপসর্গ (জ্বর, সর্দি ও গলাব্যথা) নিয়ে মাগুরা ও সাতক্ষীরায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে করোনাতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাগুরা: জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হওয়ায় করোনা সন্দেহে বাকি মিয়া নামে এক কৃষককে গত বৃহস্পতিবার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় স্বজনরা। আজ শক্রবার সকালে তার অবস্থা অবনতি হলে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত বাকি মিয়ার বাড়ি উপজেলার কলমধরি এলাকায়। এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোকসেদুল মোমিন সাংবাদিকদের বলেন,‘করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে আসেন ওই ব্যক্তি। তার অবস্থা সন্দেহজনক মনে হলে আইসলোশনে রাখা হয়। শুক্রবার সকালে অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই মারা যান তিনি। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘মৃত ওই ব্যক্তির বাড়িসহ আশেপাশের চারটি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।’
এদিকে, সাতক্ষীরার নারায়ণপুরে জ্বর, শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসান আলী (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার ঝাউডাঙ্গা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন হাসান।
মৃতের মা রোজিনা খাতুন জানান, ‘হঠাৎ করেই জ্বর ওঠে হাসানের। ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু বাড়তে থাকায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। এতে খুব দুর্বল হয়ে পড়ে সে। স্থানীয় ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ানো হয়। একপর্যায়ে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রক্ত বমি করতে করতেই মারা যান হাসান।’
বল্লী ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইরাদ আলী জানান, ‘গত ৬-৭ দিন ধরে ওই যুবকের গায়ে জ্বর, ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল বলে জেনেছি। তার মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে করোনাতঙ্ক বিরাজ করছে। ওই বাড়ির আশপাশেও এখন কেউ আসছেন না। স্থানীয় গ্রামপুলিশ দিয়ে বাড়িটি পাহারায় রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের মরদেহ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।’
তবে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শওকত জানান, ‘খবর পাওয়ার পর একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছিল। তারা তার শরীরে করোনার লক্ষণ পাননি। জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং ওই বাড়িসহ আশেপাশের ৫টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।’
এদিকে, সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশফেরত আরও ৪৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২ হাজার ৮৯৩ জনকে এ ব্যবস্থায় আনা হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্ণ করায় ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৬৯৬ জনকে।
এআই/