পবিত্র বেদে দান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩১ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০৪:৩৩ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০২০ রবিবার
বৈদিক ধর্ম অনুযায়ী গরীব-দুঃখীদের দান করা একজন মানুষের তার ইহজীবনের পাঁচটি মহাঋণের মধ্যে একটি। পবিত্র বেদ সর্বদা ই দান করাকে উত্সাহিত করেছে।এমনকি ঋগ্বেদের দশম মন্ডলের ১১৭ নং সুক্তটি সম্পূর্ণ ই দানের মহিমা নিয়ে দৃষ্ট যার কারনে সুক্তটির নাম দানস্তুতি সুক্ত।
আজ আমরা এদের মধ্যে কয়েকটি মন্ত্র নিয়ে আলোচনা করব-
শাত হস্ত সমাহার,সহস্র হস্ত সং কির।
(অথর্ববেদ ৩.২৪.৫)
অনুবাদ- আয় করতে হাতটিকে শতটিতে বৃদ্ধি কর আর দান করতে তাকে সহস্রটিতে রুপান্তরিত কর!
‘ধনীদের উচিত দুঃস্থদের দান করা,তাদের দুরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া উচিত কেননা ধনসম্পদ হল রথের চাকার মত,এখন যা এখানে পরমূহুর্তেই তা অন্যখানে গতিশীল হয়।’
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৫)
মোঘমন্নং বিন্দতে অপ্রচেতাঃ সত্যং ব্রবীমি বধ ইত স তস্য।
নার্যমণং পুষ্যতি নো সখায়ং কেবলাঘো ভবতি কেবলাদী।।
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৬)
অনুবাদ- যে ব্যক্তি দুঃস্থদের সাহায্য করেনা,অজ্ঞানী এবং অন্তঃদৃষ্টিহীন তার সকল উন্নতি ই বৃথা,সকল সম্পত্তি ই অনর্থক।যে অন্যদের সাহায্য করেনা,অভুক্ত রেখে কেবল নিজে খায় সে মূলত পাপ ই ভোজন করে।
কিন্তু অপাত্রে দান আবার ঠিক নয়।যে দান থেকে প্রাপ্ত সম্পদের অপব্যবহার করে তার অপকর্মের দায় কিন্তু দানকারীর ও বটে।এজন্য ই কিন্তু যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ বলে গিয়েছেন,
‘দান করা কর্তব্য এই চিন্তা করে, প্রতিদানের আশা না রেখে সত্পাত্রে, উপযুক্তস্থানে, সঠিককালে যে দান করা হয় তাই সাত্ত্বিক (উত্কৃষ্ট) দান।’
(গীতা ১৭.২০)
মহর্ষি মনু বলেছেন,-
‘যে ব্যক্তি পাথরের তৈরী নৌকায় চড়ে জলপথ পাড়ির চেষ্টা করেন তার সমাপ্তি যেমন সলিলসমাধিতে হয় ঠিক তেমনি অযোগ্য গ্রহীতাতে দানকারী অযোগ্য দাতাও অজ্ঞানতার গভীরে নিমজ্জিত হন।’
এখন কথা হল সর্বশ্রেষ্ঠ দান কোনটি?
সর্ব্বেষামেব দানানাং ব্রহ্মদানং বিশিষ্যতে।
বার্য্যন্নগোমহীবাস্তিলকাঞ্চনসর্পিষাম্।।
(মনুসংহিতা ৪.২৩৩)
অনুবাদ- যত ধরনের দান এই পৃথিবীতে আছে,জলদান,অন্নদান, ধেনুদান,ভূমিদান,বস্ত্রদান,তিলদান,স্বর্ণদান,এই সকল দানের মধ্যে বেদের দান/বেদশিক্ষা দান সর্বশ্রেষ্ঠ দান!
এসএ/