ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

প্রবাসীর মৃত্যুর খবরে নাসিরনগরে আতঙ্ক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৩৬ পিএম, ৮ এপ্রিল ২০২০ বুধবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় সর্বত্র বিরাজ করছে আতঙ্ক। উপজেলার সকল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চলছে অঘোষিত লকডাউন। ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কসহ সকল গ্রামীণ সড়কেও। জরুরি রোগী ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সকল যানবাহন বন্ধ রয়েছে। জনগণকে ঘরে রাখতে মাঠে নেমেছে পুলিশসহ স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ৭ এপ্রিল রাত ৮টার সময় নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মালয়েশিয়া ফেরত এক যুবকের মৃত্যু হয়। তার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলার সকল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে ঝুঁকি এড়াতে এ নির্দেশনা দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ নাসিরনগর আসনের সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি বলেন, দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় নাসিরনগরের পাশের উপজেলাগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে মাধবপুর, হবিগঞ্জ ও লাখাইয়ের অধিকাংশ মানুষ বিদেশে থাকে। তাঁরা এখন বাড়িতে আসছে। যেহেতু নাসিরনগরের সাথে এ সকল এলাকার সড়ক যোগাযোগ আছে সেহেতু নাসিরনগর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই ঝুঁকি এড়াতে সাময়িক সময়ের জন্য সকল সড়কের প্রবেশদ্বার বন্ধ করা হয়েছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান এ সংসদ সদস্য।

এদিকে জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুর পর নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের রোগী আসা কমে গেছে। যেখানে প্রতিদিন প্রায় একশ লোক সেবা নিতে আসত সেখানে ৮ এপ্রিল বৃধবার সকাল থেকে ৬-৭ জন রোগী আসছে সেবা নিতে। তারাও জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুর খবর শুনে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ অভিজিৎ রায় জানান, যেহেতু জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুর পর আমাদের জরুরি বিভাগের রুমে রাখা হয়েছিল এবং মৃত ব্যক্তির স্বজনরা এই রুমে অবস্থান করেছিল সে কারণে আমরা সাময়িক সময়ের জন্য রুমটি তালাবদ্ধ রেখে অন্য রুমে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

এদিকে সরেজমিন উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সর্বত্রই চলছে অঘোষিত লকডাউন। জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুর খবরটি প্রচার হওয়ার পরই রাস্তায় নেই আগের মতো মানুষের জনসমাগম। নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রবেশদ্বারে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল ব্যারিকেট দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। অপরিচিত কোন লোক আসলেই তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। 

গতকাল পর্যন্ত উপজেলায় ২০৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। এর মধে ১৯৬ জন মুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯ জন। করোনার আশঙ্কায় ৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রিপোর্ট না আসায় কেউ করোনা সনাক্ত হয়নি। 

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা আশরাফী জানান, জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবাসীর মৃত্যুয় উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অফিসে মিটিং হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান বাদে সকল দোকান ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলেই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

কেআই/এসি