বাহারাইনে অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হবার সূবর্ণ সুযোগ
মোহাম্মদ ফিরোজ
প্রকাশিত : ০৬:৫৯ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:১১ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২০ বৃহস্পতিবার
বাহরাইন
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় দিশেহারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সংক্রমণ ঠেকাতে নিচ্ছে কঠোর পদক্ষেপ, দিচ্ছে নানান প্রণোদনা। ঘোষণা করছে সাধারণ ক্ষমা, দিচ্ছে অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ।
চলমান করোনার প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও পড়েছেন নানাবিধ সমস্যায়, আতংকে কাটছে দিন। এরইমধ্যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার অথবা দেশে ফেরত যাবার সুযোগ করে দিয়েছে। কিছুদিন আগে কুয়েত সরকার তার দেশে অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের আগামী ১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে দেশে ফেরত সুযোগ করে দিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ এপ্রিল বাহরাইন সরকারের লেবার মার্কেট রেগুলেটরি অথরিটি (এলএমআরএ) অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি যেসব প্রবাসী বৈধ হওয়ার সুযোগ নিতে পারবে না তাদেরকে দেশে ফেরত যাওয়ার সুবিধা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাহারাইন বার্তা সংস্থা।
স্থানীয় পত্রিকাগুলো জানিয়েছে, যেসব প্রবাসী দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক তাদের কবে নাগাদ দেশে ফেরত পাঠানো হবে সে বিষয়ে আল্টিমেটাম এখনো না আসলেও চলতি বছরের শেষর দিকে অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে বাহরাইন সরকার।
বাহরাইনে নব নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ নজরুল ইসলাম বৈধ হওয়ার খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান, বাহরাইন সরকার কোনও প্রবাসীকে জোর করে ধরে পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তারা কোনও ধরনের জরিমানা ছাড়াই বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন এবং যেসব প্রবাসী চলে যেতে চায়, সেক্ষেত্রে কোনওরকম আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়াই অর্থাৎ জেল-জরিমানা ছাড়াই চলে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
জানা গেছে, বাহরাইনে যে প্রবাসীর ওয়ার্ক পারমিট অর্থাৎ কাজ করার অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে অথবা যেসব প্রবাসী কর্মী রানওয়েতে আছেন এসব প্রবাসী কর্মীরা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু যেসব প্রবাসীদের বিরুদ্ধে বাহরাইন সরকারের আইন লঙ্ঘন করার কারণে কোর্টে বিচার চলছে, ভিজিট ভিসায় এসে অবৈধভাবে বসবাস করছেন, ট্রাভেল পারমিট যাদের নাই সেসব প্রবাসীরা সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়বেন না।
এছাড়া, বৈধ হওয়ার জন্য যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল তাও সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে এবং ওয়ার্ক পারমিট এর বাৎসরিক খরচ ৪২৭ দিনার থেকে কমিয়ে ১৬৭ দিনার করা হয়েছে।
বাহরাইন সরকারের বৈধ হওয়ার সুযোগকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ বাহরাইনে বসবাসকারী প্রবাসী আব্দুল জাকির সরকার। তিনি মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি সুবিধা দিয়েছে বাহরাইন।
তিনি বলেন, বাহরাইন সরকার ইতোমধ্যে তিন মাসের ওয়ার্ক পারমিট ফি মওকুফ করাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে প্রবাসীদের জন্য। এতে করে অবৈধ হয়ে যাওয়া প্রবাসীরা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবে খুব সহজেই।
তিনি এই মুহূর্তে বাহরাইন প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত না গিয়ে বৈধ হওয়ার সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
এনএস/