ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

‘চিকিৎসা দেব না’ বলার প্রশ্নই ওঠে না: বরখাস্ত চিকিৎসক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১১ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২০ রবিবার

কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল

কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল

‘দুই মাস ধরে হাসপাতালে কোভিড-১৯-এর রোগী সেবা করছি। চিকিৎসা দেব না- এমন কথা কখনোই বলিনি, লিখিত দিইনি। আমি তো জেনে শুনেই কাজ করছি। তাই দেব না বলার প্রশ্নই ওঠে না।’ বরখাস্ত হওয়ার পর এমন সব কথাই বলেছেন কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের (সাময়িক বহিষ্কৃত) জুনিয়র কনসালটেন্ট (স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা) শারমিন হোসেন।

রোববার (১২ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে ওই চিকিৎসক বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক স্যার আমাকে কোনো টেলিফোন না করে বা কোনো কিছু না জানিয়ে আমার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাম পাঠিয়েছেন যে, আমি নাকি কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে ইচ্ছুক না। এমন কথা আমি মৌখিক বা লিখিতভাবে কখনো স্যারের কাছে অথবা কারও কাছে প্রকাশ করেছি বলে আমার জানা নেই।'

বিব্রত শারমিন হোসেন বলেন, 'কোনো অপরাধ না করেও সামাজিক ও মানসিকভাবে হেনস্থার শিকার হলাম। নাম, ছবি, মোবাইল নম্বর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষজন ডাক্তারদের নিয়ে বিভিন্ন কথা বলছে।'

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আজ গিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমার দরখাস্ত, কাজের রোস্টারের কপি ও হাজিরা খাতা জমা দিয়েছি। আমি যে ডিউটি করেছি, তার ডকুমেন্ট রয়েছে। সেখানকার স্যারেরা বলেছেন, 'আপনাকে সামাজিক ও মানসিকভাবে যে হেনস্থা করা হলো তা আমরা পূরণ করতে পারব না; তবে মন্ত্রণালয়ে আপনার দরখাস্ত পাঠিয়ে দেওয়া হবে।"

জুনিয়র এই কনসালটেন্ট আরও বলেন, "রোস্টার অনুযায়ী আমি নিয়মিত ডিউটি করেছি। আমাকে বরখাস্ত করা হবে- সে বিষয়ে আমাকে কিছু বলা হয়নি। শনিবার দুপুরে আমার এক সহকর্মী জানান এ বিষয়ে। সন্ধ্যায় ঝড়ের মধ্যে আমি হাসপাতালের তত্বাবধায়ক স্যারের সঙ্গে দেখা করে বলি, 'আমি তো ডিউটি করেছি, তবে কেন এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?'

"স্যার তখন বলেন, 'সরি, ভুল করে আপনার নাম দেওয়া হয়েছে। আমি ফোন করে সব ঠিক করে দিচ্ছি।' পরে রাতে জানতে পারি, আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।"

গত ১ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ডিউটিতে ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন ওই চিকিৎসক। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বেলাল হোসেন জানান, তিনি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন।

এদিকে, চিকিৎসক শারমিন হোসেনের ফেসবুক লাইভের ভিডিও বেশ কিছু চিকিৎসক শেয়ার দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমালোচনা করেছেন, করেছেন নানা মন্তব্য।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১১ এপ্রিল) কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেহাব উদ্দিন। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে এই ছয় চিকিৎসক অনিচ্ছা পোষণ করেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে। পরে ওই দিনই সন্ধ্যায় তাদের সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

এনএস/