করোনায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৪৫ এএম, ১৭ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার
করোনায় গৃহবন্দি বিশ্ব। তারপরও থেমে নেই প্রকোপ। যেখানে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত ও মৃতের তালিকা পরিবর্তিত হচ্ছে। দীর্ঘ হচ্ছে স্বজনহারাদের সারি।
বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের দেয়া তথ্যা বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের ৯৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নতুন করে ভাইরাসটির কবলে পড়েছেন। এতে করে ভাইরাসটি বহনকারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৮ জন। যার বড় একটি অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
পাল্লা দিয়ে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের তালিকাও। যেখানে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের আরও ১০ হাজার ৮৬৭ জন মানুষ। আর এতে করেই মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭০ জনে ঠেকেছে। এর মধ্যে শুধু ট্রাম্পের দেশ যুক্তরাষ্ট্রেই ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ।
আক্রান্তের তুলনায় কম হলেও এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৯ জন। তবে, আক্রান্তদের মধ্যে এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন ৫৬ হাজার ৫৮৮ জন মানুষ।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮২ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ প্রায় ৭৩ হাজার ২১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৪ হাজার ৩৮৪ জনের। প্রতিদিনিই রেকর্ড আক্রান্ত ও মৃত্যুতে কঠিন অবস্থা পার করছে দেশটির জনগণ। অবস্থা আরও বেগতিক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এরপরই রয়েছে ইউরোপের দেশ স্পেন। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ প্রায় ৮৫ হাজার। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৯ হাজার ৩১৫ জনের।
ইউরোপের আরেক দেশ ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ প্রায় ৬৯ হাজার। যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২২ হাজার ১৭০ জন।
মৃতের সংখ্যায় চতুর্থ স্থানে একই মহাদেশের ফ্রান্স। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৭ জন। এরমধ্যে ১৭ হাজার ৯২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে বর্তমানে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লাখ ৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ হাজার ৭২৯ জন। তবে, সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৩৩ হাজার মানুষ। ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯৮ জন। মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৫২ জন।
করোনার ভয়াবহতায় শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় শেষ তিনে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান, এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যঞ্চলীয় দেশ তুরস্ক আর ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম।
ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার। প্রাণ হারিয়েছে দেশটির ৪ হাজার ৮৬৯ জন নাগরিক। প্রথম দিকে চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংক্রমণ ঘটলেও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকানো সম্ভব হয় সেখানে।
অপরদিকে, আরেক মুসলিম দেশ তুরস্কে প্রথমদিকে করোনার অবস্থা তেমনটা বেগতিক না হলেও গতমাসের মাঝামাঝি থেকে ব্যাপকতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে সেখানকার করোনা অবস্থা। দেশটিতে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ১৯৩ জন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৬৪৩ জন।
ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩৫ হাজার। যেখানে মারা গেছে ৪ হাজার ৮৫৭ জন নাগরিক। তবে সুস্থ হয়েছেন সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ।
দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভারত। দেশটিতে আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়েছে। মোদির দেশে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৮৬ জন।
আর বাংলাদেশে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫৭২ জন। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ৬০ জনের। গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা শনাক্ত হয়।
এআই/