ভারতে আরও ৪৩ জনের মৃত্যু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৭ এএম, ১৮ এপ্রিল ২০২০ শনিবার
ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতহারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এতে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮০ জনে দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে, গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু কম হলেও থেমে নেই সংক্রমণের সংখ্যা। যেখানে গত একদিনেই ৯৯১ জনের মধ্যে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হাজার ৩৭৮ জনে ঠেকেছে। আর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ হাজারের বেশি মানুষ।
আজ শনিবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
চলমান অবস্থায় শুক্রবারই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশব্যাপী লকডাউনের ফলে অনেকটাই কার্যকরি ফল মিলছে। আগে যেখানে প্রতি ৩ দিন অন্তর দ্বিগুণ হচ্ছিল আক্রান্তের হার, সেখানে বর্তমানে সেই বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমে এসেছে। এখন প্রতি ৬.২ দিন অন্তর দ্বিগুণ হচ্ছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা।
এদিকে, করোনা এবার ভারতীয় নৌ-বাহিনীতেও হানা দিয়েছে। মুম্বইয়ের ২১ জন নাবিকের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যেই ওই নাবিকরা যাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ওই ভারতীয় নাবিকদের আইএনএস আংগ্রিতেই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
ভারতে করোনা সবচেয়ে প্রভাব ফেলেছে বাণিজ্য নগরী মুম্বাইয়ে। সেখানে করোনায় ভুগছেন ২ হাজার ৭৩ জন। আর রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। ১ দশমিক ২ কোটি মানুষের বসবাসের ওই শহরটি গত মাস থেকেই সম্পূর্ণ লকডাউনের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে করোনা রোধে ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কুষ্ঠরোগের বিরুদ্ধে কার্যকরি ১টি বহুমুখী ভ্যাকসিনকে করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখছেন তারা। কেননা ওই ভ্য়াকসিনটি মানবদেহে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) এটির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার পরেই কুষ্ঠরোগের বিরুদ্ধে সফলভাবে কাজে লাগানো এই মেগাওয়াট ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ব্য়বহার শুরু হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার লকডাউনের মেয়াদ আগামী ৩ মে পর্যন্ত ঘোষণা করেন। তবে এ কথাও বলেছেন যে, ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে এই ভাইরাস বেশিমাত্রায় সংক্রমণ ঘটাচ্ছে, আর কোনো কোনো অঞ্চল এখনও পর্যন্ত তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে, আগামী কয়েক দিন কঠোরভাবে সে বিষয়ে নজরদারি করা হবে।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্য়া শিখড় ছুঁতে পারে, তবে তারপর থেকেই ধীরে ধীরে এই সংখ্যা কমতে পারে।
২০ এপ্রিল পর্যন্ত সকল পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধীরে ধীরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে। বেশ কিছু শিল্প ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার অনুমতি পাওয়া যাবে ওই সময় থেকে। ছাড় থাকছে কৃষিকাজ ও কৃষি বিপণন এবং তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কাজ, নির্দিষ্ট কিছু শিল্প ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সাধারণ পণ্য, দুটির পরিবহণেই মিলবে ছাড়।
যে রাজ্যগুলো করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শুনেই আগেভাগে লকডাউনের পথে হেঁটেছে তারা অন্যদের তুলনায় অনেকটাই ভালো অবস্থানে রয়েছে। রাজস্থান, পঞ্জাব এবং বিহার এই ৩টি রাজ্যই প্রথম থেকে লকডাউনের পথে হেঁটে ছিল। তাই দেখা গেছে, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় ওই রাজ্যগুলো অনেকটাই ভাল অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুক্রবার বলেছে যে করোনা ভাইরাস সঙ্কট নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করার পর থেকেই অনেক দেশ তাদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংশোধন করার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে তারা সম্ভবত চীনকেই অনুসরণ করবে।
উহান, যেখান থেকে করোনা ভাইরাসের পথচলা শুরু হয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসে, শুক্রবার সেই দেশই জানায় যে তারা মৃত্যুর পরিসংখ্য়ান ঠিকভাবে দিতে পারেনি। এখন দেখা যাচ্ছে, উহানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করেই ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
এআই/