ভার্চুয়াল মাধ্যমে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০৩ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৫:২৭ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২০ শনিবার
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্যও। খাবার, জরুরি ওষুধ আর নিতান্ত প্রয়োজনীয় ছাড়া দেশটিতে সব ধরনের অফিস আদালত বন্ধ। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশটির পার্লামেন্টও। কিন্তু দেশ পরিচালনা ও সরকারের ভূমিকা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে সেজন্য পার্লামেন্টে আলোচনা-সমালোচনা প্রয়োজন। ব্রেক্সিট আইনটি নিয়ে বিতর্কের কারণে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চালু রাখতে হবে এবং বাজেটে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারকে অর্থবিলটি পাস করতে হবে।
এ অবস্থায় এনএইচএসসহ সরকারের নানা ভূমিকার সমালোচনা করে গত সপ্তাহে পার্লামেন্ট খুলে জরুরি আলোচনার প্রস্তাব করে বিরোধী লেবার লিডার কেয়ার স্টারমার। এছাড়া পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের কমিশনও অনুভব করে জরুরি আলোচনার। এরই প্রেক্ষিতে স্পিকারের উপস্থিতিতে ১৭০ জন এমপিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা করেছে হাউস অব কমন্স।
এদিকে, ব্রিটেনে এখন চলছে স্টার হলিডে। সরকারি এই ছুটি শেষ হবে ২১ এপ্রিল। এদিনই এমপিরা সংসদে ফিরে আসার পরে পরবর্তী সপ্তাহে পরিকল্পনাটি অনুমোদন করা হবে। এহেন অবস্থায় সাতশ’ বছরের প্রথা ভেঙে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো অনলাইনে প্রশ্নোত্তর পর্ব কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই ভার্চুয়াল পার্লামেন্ট বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হবে অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিং প্লাটফরম ‘জুম’।
এ বিষয়ে হাউস অব কমন্সের পরিচালনা পরিষদ সম্প্রতি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ ভার্চুয়াল সংসদ করার পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা করলেও ২১ এপ্রিলের পর এমপিরা যখন ছুটি শেষে ফিরবেন তখন তাদের অনুমোদন লাগবে। আর ওই অনুমোদনের পরই ডিজিটাল পার্লামেন্ট অধিবেশন বসবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসে এই প্রথম ডিজিটাল পার্লামেন্ট অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। প্রায় ৭০০ বছরের ঐতিহ্য ভেঙে ১২০ জন এমপি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন জুম ব্যবহার করে। আর ৫০ জন এমপি পার্লামেন্ট কক্ষে সোশ্যাল ডিসটেন্স অনুসরণ করে বসবেন। তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে পারবেন। ডিজিটাল পার্লামেন্ট বিষয়ে সব এমপির সবুজ সংকেত পেলেই পার্লামেন্ট কক্ষে বড় ভিডিও স্ক্রিনও বসানো হবে।
এ বিষয়ে হাউস অব কমন্সের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বলেন, ডিজিটাল এই সমাধানটি সংসদ সদস্যকে তার জনগণের নিকটবর্তী হতে এবং কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সরকারকে তাদের তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
স্যার লিন্ডসে আরো বলেন, ভার্চুয়ালি কাজ করার মাধ্যমে, ঘরে বসে থাকতে, এনএইচএসকে রক্ষা করতে এবং জনগণের জীবন বাঁচানোর দিক নির্দেশনায় এই পদ্ধতি ভবিষ্যতে অনুসরণ হবে বলে আমার বিশ্বাস।
এসএনপি ওয়েস্টমিনস্টার নেতা ইয়ান ব্ল্যাকফোর্ড বলেছেন, ‘আমাদের দায়িত্বকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। আমাদের জনগণ আশা করে আমরা সরকারকে জবাবদিহি করব। তিনি বলেন, আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। কাউকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা ঠিক হবে না।’
এদিকে, কেবল হাউস অব কমন্স নয়, ওয়েলস জাতীয় সংসদ সদস্যরা গত সপ্তাহে ভার্চুয়াল সংসদীয় অধিবেশন চলাকালীন তাদের প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয়। স্কটল্যান্ডের চারটি বিরোধী দলের নেতারাও গত ১৬ এপ্রিল প্রথমবারের মতো একটি অনলাইন বৈঠক করেন।
এনএস/