ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতিবিদরা যেসব ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:২৪ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২০ সোমবার

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংকটের মধ্যে নানা রকম উদ্ভট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা দাবি অনলাইনে নিয়মিত ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে কিছু এসেছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে।

হাসপাতালের ফেসমাস্ক চুরি থেকে শুরু করে করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা এবং জীবাণু যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এই ভাইরাস ব্যবহারের কথা–সব রকম দাবিই শোনা গেছে রাজনীতিবিদদের মুখে।

আসুন দেখে নিই এরকমই কিছু দাবির কথা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

তিনি শুরুতে করোনা ভাইরাসকে তেমন পাত্তা দিতে চাননি। তবে পরে বলেন, এটা বিশ্বব্যাপী মহামারিতে পরিণত হয়েছে। যখন ফেসমাস্কের চাহিদা বেড়ে গেল, তখন ট্রাম্প দাবি করেন নিউইয়র্কের হাসপাতাল থেকে বিপুল সংখ্যক সার্জিক্যাল মাস্ক চুরি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি প্রশ্ন করেন, এত মাস্ক কোথায় যাচ্ছে? এগুলো কি পেছনের দরজা দিয়ে অদৃশ্য হযে যাচ্ছে? কিন্তু এরকম বিপুল সংখ্যায় মাস্ক চুরির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে

বেশ কিছু চীনা কর্মকর্তা বারবার বলার চেষ্টা করেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সূচনা চীনে হয়নি। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজান বারবার এ কাজ করেছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এসব মিথ্যা দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে কোভিড-১৯ হয়তো সৃষ্টি করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

আরেকটা দাবি ছিল যে, চীনের অনেক আগেই ইতালিতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু এরকম দাবির সত্যতার পক্ষে কোন প্রমাণই পাওয়া যায়নি।

বৈজ্ঞানিকরা একমত যে, ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম অন্যপ্রাণী থেকে করোনা ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছিল।

চীনের সৃষ্টি করোনা ভাইরাস

ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতা মাত্তিও সালভিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, চীনই একটি ল্যাবরেটরিতে করোনা ভাইরাস সৃষ্টি করেছে। এটাও আরেকটা মিথ্যে দাবি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ দাবি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে কোভিড-১৯ মানুষের তৈরি কোন ভাইরাস নয়। 

ম্যালেরিয়ার ওষুধে কোভিড ১৯ সেরে যাবে

ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারোর অনেক উক্তি সেন্সর করেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্র্রাম, টুইটার এবং ইউটিউবের মত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলো।

এসব পোস্টের একটিতে তিনি দাবি করেছিলেন, ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সম্পূর্ণরূপে করোনা ভাইরাস সারাতে পারে। আসলে এ নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগও হচ্ছে কিন্তু সার্বিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি।

দুর্বল মিউটেশন

ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন, ভারতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে তা এ ভাইরাসের একটি দুর্বল মিউটেশন এবং মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে।

তবে গবেষকরা কিন্তু এমন কথা বলছেন না। সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা পরিবর্তন হয় কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন কোন নমুনা এখনো পাননি যে কোভিড-১৯ কত মারাত্মক হতে পারে।

আসলে এ ব্যাপারে অনেক কিছুই এখনো মানুষের অজানা। এই ভাইরাসটি আমাদের সবার জন্যই বিপদের কারণ–কিন্তু তা অনলাইনে ভুয়া দাবির যে ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে তা ঠেকাতে পারেনি।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা 

এআই/