ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা দান করলো ৩য় শ্রেণির ছাত্রী

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:৫৭ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২০ শনিবার

জেলা প্রশাসকের হাতে মাটির ব্যাংকে দুই বছরের জমানো টাকা তুলে দিচ্ছে মুক্তা আক্তার।

জেলা প্রশাসকের হাতে মাটির ব্যাংকে দুই বছরের জমানো টাকা তুলে দিচ্ছে মুক্তা আক্তার।

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পুরো বাংলাদেশে যখন লকডাউন চলছে এবং এর প্রভাবে যখন থমকে গেছে অর্থনীতির চাকা, কর্মহীন হয়ে পড়েছে সারাদেশের মানুষ। দুর্দশা আর দৈন্যতায় দিন কাটছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। ঠিক তখনই প্রিয়জনদের থেকে পাওয়া উপহার ও স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে জমানো টাকা কর্মহীন, অসহায়, অসচ্ছল ও অভুক্ত মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে নজির স্থাপন করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা আক্তার। 

শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে সে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. এ কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের হাতে মাটির ব্যাংকে দুই বছরের জমানো টাকা অসহায় দরিদ্রদের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেয়ার জন্য তুলে দেয় মুক্তা।

এসময় জেলা প্রশাসক আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ছোট্ট শিশুর মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা এভাবে অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য দেয়াটা আমি অনুকরনীয় বলে মনে করছি। তার কোমল হৃদয়ে যে করোনার বিষয়টি আঘাত করেছে এবং সে এ ক্রান্তিকালে গরীব অসহায়দের জন্য ভেবেছে এটাই বিশাল পাওয়া। দেশের এই সংকটের মুহূর্তে স্কুল ছাত্রী মুক্তার এই অবদান আমরা সবসময় মনে রাখবো।

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে সন্তানরা যখন তাদের পিতা-মাতাদের জঙ্গলে ফেলে যাচ্ছে, শেষবারের মতো প্রিয়জনদের লাশ দেখতে আসছে না কেউই, দাফনেও পাওয়া যাচ্ছে না স্বজনকে। এমন সময়  আর্তমানবতায় সেবায় এগিয়ে এসে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে শিশু মুক্তা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আব্দুল লতিফ ও গৃহিণী নাসিমা বেগমের একমাত্র কন্যা মুক্তা। এই সংকটে মেয়ের এমন দানে গর্বিত পিতামাতা। বড় হয়ে দেশসেবায় মানুষের পাশে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা। 

স্কুল ছাত্রী মুক্তা জানায়, আমি টিভিতে দেখেছি গরীব মানুষরা অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। তারা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। তাই আমি আমার দুই বছরের টিফিনের জমানো টাকা ও বিভিন্ন সময় উপহারের জমানো টাকা গরীব মানুষদের জন্য দিয়ে দিলাম। 

ছোট্ট শিশুর এমন অবদানে অভিভুত ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। তারা বলছেন, এটি যেমন গর্বের তেমনি সমাজের বিত্তবানদের জন্যে ভীষন লজ্জারও বটে। কোমলমতি এই শিশুর দেখানো পথে সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। 

এনএস/