চীনে করোনায় গত ১১ দিনে কোনো মৃত্যু নেই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:২৫ এএম, ২৭ এপ্রিল ২০২০ সোমবার
করোনা মহামারীর আঁতুড়ঘর চীনে টানা ১১ দিন ধরে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এটিকে আশার আলো হিসেবে দেখা হলেও বেইজিংয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে সেখানকার সব জিমনেশিয়াম ও সুইমিংপুল বন্ধ করে দিয়েছে চীন।
দেশটির রাশিয়া সীমান্তের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শানসির একটি শহর কয়েকদিন আগে লকডাউন করে কর্তৃপক্ষ। তার পরই বেইজিংয়ে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খবর ডেইলি মেইলসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।
বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার ৮২৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৭ হাজার ৩৪৬ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। চীনে সবশেষ ১৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেদিন ৪৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছিল।
এরপর থেকে রোববার পর্যন্ত আর কোনো মৃত্যু হয়নি সেখানে। ১৬ এপ্রিলও ৪৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে ৩৪ জন বিদেশ থেকে আগত। আর ১২ জন স্থানীয়। ১৭ এপ্রিল উহানের মোট মৃতের সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করে ৩ হাজার ৮৬৯ করা হয়। সেদিন ২৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়। তবে কোনো মৃত্যু ছিল না। ১৮ এপ্রিল ২৭ জন নতুন আক্রান্ত হয়। এরপর ১৯ এপ্রিল ১৬ জন, ২০ এপ্রিল ১২ জন, ২১ এপ্রিল ১১ জন, ২২ এপ্রিল ৩০ জন, ২৩ এপ্রিল ১০ জন, ২৪ এপ্রিল ৬ জন, ২৫ এপ্রিল ১২ জন ও ২৬ এপ্রিল ১১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়। এ সময়ে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
বেইজিংয়ে জিমনেশিয়াম ও সুইমিংপুল বন্ধ : বেইজিংয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় সেখানকার সব জিমনেশিয়াম ও সুইমিংপুল বন্ধ করে দিয়েছে চীন। রাশিয়া সীমান্তের কাছে এক কোটি মানুষের একটি শহর কয়েকদিন আগে লকডাউন করে স্থানীয় প্রশাসন। এর পরই বেইজিংয়ে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শনিবার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শানসিতে করোনাভাইরাসে ৭ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। রাশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ওইসব ব্যক্তি। ফলে সেখানে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়।
এমন খবর দিয়ে লন্ডনের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, যদি দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ ঘটে তাহলে তা হবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য একটি পশ্চাৎপদতা। কারণ তিনি দেশের অর্থনীতিকে নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করছেন। তা ছাড়া বাকি বিশ্বের কাছে ক্ষমতা ও শক্তি প্রদর্শন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, যাদের বিশ্বের এক নম্বর শক্তিধর দেশ বলা হয়, তারাই করোনা মোকাবেলা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে তারা বিশ্বের কাছে তাদের শক্তিমত্তার প্রকাশ ঘটাচ্ছে বলে আলোচনা আছে।
বলা হয়, চীন নিজেদের বিশ্বের এক নম্বর শক্তিধর হিসেবে আবির্ভূত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় যদি করোনা সংক্রমণ ঘটে তাহলে সেই চেষ্টা অনেকটাই ব্যর্থ হবে। বেইজিংয়ের হিসাবে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে সংখ্যা তাতে অবিশ্বাস আছে। বিশেষ করে পশ্চিমা নেতাদের মধ্যে এই অবিশ্বাসটা বেশি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরিই এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে চীনের প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পক্ষপাতিত্ব করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এমবি//