ঢাকা, বুধবার   ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ১০ ১৪৩১

সিঁড়িতেই পড়ে থাকলো কোটিপতির লাশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৭ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৪:৪৩ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

সিঁড়িতে পড়ে থাকা খোকন সাহার মরদেহ

সিঁড়িতে পড়ে থাকা খোকন সাহার মরদেহ

নারায়ণগঞ্জের গলাচিপায় সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে খোকন সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ সিড়িতে পড়ে থাকার পর বেলা ১২টার দিকে খবর পেয়ে খোকন সাহার মরদেহ সংগ্রহ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

জানা যায়, খোকন সাহা নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা এলাকার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ৭ তলা ফ্ল্যাট ভবনের মালিক। সাত বন্ধু মিলে এই ফ্ল্যাট বাড়িটি তৈরি করেছেন। ওই ভবনের ৪ তলাতে তিনি স্ত্রী ও ছোট দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন। বিত্তবৈভব আর ধনসম্পত্তির কমতি ছিলো না তার। এদিন সকালে যখন তার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়, তখন তার পরিবারের সদস্যরা আশপাশের ফ্ল্যাটে থাকা উনার সেই বন্ধু-বান্ধব এবং পরিচিত আত্মীয় স্বজনদের ডেকেছিলেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করতে। কিন্তু কেউ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। পরে, স্ত্রী ও ছোট দুই মেয়েই খোকন সাহাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চারতলা থেকে নামিয়ে আনছিলেন। সেই সময় নামানোর পথে সিঁড়িতেই তার মৃত্যু হয়। এরপরও কেউ এগিয়ে আসেনি। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ খোকন সাহার মরদেহ সিঁড়িতেই পড়েছিল। কেউ একবারের জন্যও ছুঁয়ে দেখেনি। এমনকি স্ত্রী-কন্যার কান্নায়ও মন গলেনি কারো।

বেলা ১২টার দিকে খবর পেয়ে খোকন সাহার মরদেহ সংগ্রহ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তিনি ও তার দলের লোকজন খোকন সাহার সৎকার সম্পন্ন করেন। মৃতের সম্প্রদায় কিংবা তার স্বজনরা কেউ এগিয়ে না আসায় পরিবারের অনুমতি নিয়ে খোকন সাহার মুখাগ্নির কাজটিও করেন মাকসুদুল আলম খন্দকার নিজেই। 

করোনা ভাইরাস শুধুমাত্র মানুষের স্বার্থপরতার দিকটি উন্মোচন করেনি, মাকসুদুল আলম খন্দকারের মতো কিছু পূর্ণাত্মাকেও খুঁজে পেতে সহযোগিতা করেছে। 

এনএস/