ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

রমজানের চতুর্থ দিন : গোনাহ মাফ করিয়ে নিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫১ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

অতীতের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করা হলে আল্লাহতায়ালা মাফ করে দেন। তওবা দ্বারা আল্লাহতায়ালার অসন্তোষ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, ‘অন্যায় উৎপীড়ন শেষে যে তওবা করে এবং আত্মশুদ্ধির অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। আল্লাহ তার তওবা গ্রহণ করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’

হাদীস শরীফে আছে হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একদা মহানবীর সম্মুখে কিছু যুদ্ধবন্দী আনীত হলে তিনি দেখলেন তাদের মধ্যে একজন মহিলা দৌড়াচ্ছে। তার স্তনযুগল হতে দুধ ঝরছে এবং ছোট শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে দুধ পান করাচ্ছে। এটা দেখে মহানবী (সা.) এরশাদ করলেন, ‘তোমরা কি চাও যে এই মহিলা সন্তানটিকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করুক?’ আমরা বললাম, আল্লাহর কসম। তার যদি শক্তি থাকে তবে সে নিক্ষেপ করতে দিবে না। একথা শুনে তিনি এরশাদ করেন, ‘আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের সঙ্গে উক্ত মহিলার চেয়েও অধিকতর দয়ালু। যেমন স্নেহশীল মাতা তার সন্তানকে স্নেহ করেন।’ তাই আল্লাহর দরবারে আমাদের অপরাধ ও চরিত্রে অনেক দোষ-ত্রুটি রয়েছে এগুলোর থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তওবা করতে হবে। তওবার শর্ত হলো চারটি :

১. পাপ থেকে ফিরে গিয়ে পুনরায় তা না করার জন্য শপথ নিয়ে প্রস্তুত থাকা।

২. যে পাপ একবার করেছে তা থেকে বিরত থাকার জন্য তওবা করা।

৩. পূর্বকৃত যে পাপ করেছে তা বর্তমানে করা সম্ভবপর না হলেও তওবা করতে হবে।  তবে অন্যান্য যে পাপ এখনও হতে পারে তার জন্যও তওবা করতে হবে। যেমন : ৮০ বছরের বৃদ্ধ তার পূর্বকৃত ডাকাতি, রাহাজানি, সুদ গ্রহণকারী, অবিচার বা জেনার জন্য তওবা করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল করবেন। তবে সঙ্গে সঙ্গে মিথ্যা বলা, অশ্লীল আলোচনা করা যা তার পক্ষে এখনও করা হচ্ছে সেগুলোর জন্য তওবা করতে হবে, নচেৎ তার পূর্বের তওবা কবুল হবে না।

৪. তওবা করতে হবে কেবল আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর আযাব থেকে বাঁচার জন্য, লোকভয় বা সামাজিক চাপ ও আর্থিক অনটনে পড়ে তওবা করলে তা কবুল হবে না।

সুতরাং রমজান মাসে রোযা পালনের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে অতীতের গুনাহের জন্য তওবা করবো ও মাফ চাইবো। আর বলবো ‘হে আল্লাহ! তোমারই জন্য সারাদিন পানাহার ও অন্যান্য নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত রয়েছি, একথা বলে আল্লাহর কাছে ধরণা দিব। কেননা রমজান মাসে সব শয়তান শিকলে বন্দী করে রাখা হয়। এতে সৎকাজ ও আমল করতে সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। উপরের এই চারটি শর্ত পালন করতে পারলেই প্রকৃতপক্ষে তওবা কবুল হবে, অন্যথায় নয়।

তথ্যসূত্র : মাওলানা হারুনুর রশিদের রমজানে করণীয় ও বর্জনীয় গ্রন্থ

এএইচ/