ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মৃত্যু দেখতে দেখতে হতাশায় আত্মহত্যা মার্কিন চিকিৎসকের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:২৩ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত আমেরিকায় সামনের সারিতে থাকা এক শীর্ষ চিকিৎসক চোখের সামনে মৃত্যু দেখতে দেখতে হতাশায় নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। করোনায় লাশের সারি দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।

ওই চিকিৎসকের নাম ডা. লরনা ব্রিন। তিনি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে গিয়ে নিজেও কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর সুস্থ হয়ে আবার নেমে পড়েছিলেন করোনা মোকাবিলায়।

বিবিসি জানায়, নিউইয়র্ক সিটির বাসিন্দা ডা. লরনা ম্যানহাটানের নিউইয়র্ক-প্রেসবাইটেরিয়ান অ্যালেন হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ডিরেক্টর ছিলেন।

৪৯ বছর বয়সী এই চিকিৎসক রবিবার নিজের শরীরে আঘাত করে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। সে সময় তিনি ভার্জিনিয়ায় নিজের পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন।

ডা. লরনার বাবা  ফিলিপ ব্রিন নিজেও একজন চিকিৎসক। তিনি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘সে তার কাজটি করে যাচ্ছিল এবং এটিই তাকে হত্যা করেছে।’

তিনি জানান, তার মেয়ের কোনও ধরনের মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস ছিল না।

ফিলিপ ব্রিন জানান, হাসপাতালে কাজ করতে করতে তার মেয়েও করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল। পরে সুস্থ হয়ে দেড় সপ্তাহ পর আবার কাজে ফিরে গিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল।

সর্বশেষ যখন কথা বলছিলেন মেয়েকে ‘বিচ্ছিন্ন’ মনে হয়েছিল ফিলিপের। সে সময় লরনা তাকে বলছিলেন, হাসপাতালে কীভাবে মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে তোলার আগেই করোনায় মারা যাচ্ছিল। ম্যানহাটনের ২০০ শয্যার হাসপাতালটিতে বহু সংখ্যক মানুষ মারা গেছে করোনায়।

ফিলিপ ব্রিন বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে একেবারে খাদের সামনে গিয়ে লড়ছিল সে। আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, সে একজন বীর হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন এই লড়াকু চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী জানায় সেই সঙ্গে করোনা মোকাবেলায় একজন ‘মহান বীর’ বলে আখ্যা দেয়।

উল্লেখ্য, দেশটিতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টা) দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ ১০ হাজার ৫০৭ জন। এর মৃত্যু হয়েছে ৫৬ হাজার ৮০৩ জনের। পাশাপাশি আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আরও ১৪ হাজার ১৮৬ জন।
এসএ/