ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, বিক্ষোভ করলেও মামলা করেনি স্বজনেরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার
ভুল চিকিৎসায় মৃত ফজিলা বেগমের লাশ নিয়ে স্বজনের আহাজারি
ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের ক্লাসিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ফজিলা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগে নিহতের আত্মীয়-স্বজনেরা চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কিন্ত রহস্যজনক কারণে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত নিহতের স্বজনদের কেউ থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসকের নিয়োজিত সংঘবদ্ধ একটি দল ঘটনার পর নিহতের স্বজনদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নিহতের চিকিৎসার খরচের টাকা ফেরতবাবদ ও দোয়া পড়ানোর কথা বলে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিশেষভাবে ম্যানেজ করে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। ফলে নিহতের পক্ষে কেউ কোথাও কোন অভিযোগ দায়ের করেননি।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, একজন চিকিৎসকের অবহেলায় ফজিলা বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর তিনি পেয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি ফলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দক্ষিণ ফারাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা দুলাল হোসেনের স্ত্রী ফজিলা বেগম পেটে ব্যথা নিয়ে সোমবার সকালে শহরের ক্লাসিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের কাছে যান। এসময় চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম রোগীর লোকজনকে দোকান থেকে একটি ইনজেকশন কিনে আনতে বলেন। পরে ওই ইনজেকশনটি গৃহবধূর শরীরে পুশ করলে তিনি ছটফট এবং রক্তবমি করতে থাকেন। এ অবস্থায় চিকিৎসক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সদস্যদের দিয়ে কৌশলে রোগীকে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালের জুরুরী বিভাগে অসুস্থ গৃহবধূকে চিকিৎসা দেয়ার আগেই তিনি মারা যান এবং ঘটনার পর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বতাধিকারী ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম ও তার লোকজন প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন নিহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যগণ। পরে রোগীর স্বজনরা ডাঃ জাহাঙ্গীরের আলমের উপযুক্ত বিচার দাবি করে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের এমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার তওসীফ বিন মামুন জানান, রোগী হাসাপাতালের আসার আগেই মারা গেছে। তখন আমাদের কিছু করার ছিল না। তার চিকিৎসায় ঘাটতি ছিল বলেই হয়তো ওই রোগী মারা গেছে।
এদিকে মঙ্গলবারেও চিকিৎসকসহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন লোকজনকে কোথাও পাওয়া যায়নি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী অভিযুক্ত ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এনএস/