ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার সতর্কতা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৩:১০ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২০ বুধবার
প্রতীকী ছবি
চলমান করোনা আতঙ্কে দেশবাসী। চিকিৎসা সংকট এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় আবার ডেঙ্গু নিয়ে শুরু হয়েছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। মশক বাহিনীর এ তৎপরতা রুখতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বেশি আতংঙ্কে আছেন নিম্ন আয়ের কর্মজীবি মানুষ। ঘরে বসে থাকায় একদিকে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনা-ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। সবমিলে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দীন কাটছে তাদের।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এডিস মশার বংশ বিস্তারের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ফুলের টব, টায়ার, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের খালি বোতল, নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে জমে থাকা পানি ইত্যাদি কারণে এডিস মশার বংশ বিস্তার ঘটে। এডিস মশার বংশ বিস্তারের কারণে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে প্রয়োজনীয় সতর্কতা-
১. নির্মাণাধীন ভবনের কিউরিং চলাকালীন সময়ে পানি জমিয়ে না রেখে ২ (দুই) দিন পরপর পানি পরিবর্তন করুন,
২. নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবন এবং এর আশেপাশের চৌবাচ্চার পানি পরিবর্তন করুন,
৩. সরকারি ব্যবস্থাপনায়/ডেভেলপার/সমবায়/মালিক কর্তৃক নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবনের ভিতরে ও বাহিরে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
এছাড়াও এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু মোকাবেলায় করনীয়-
১. মশার উৎপত্তিস্থল যেমন- শহরের খাল, নালা, দুই বাড়ির মধ্যবর্তী অপরিচ্ছনন্ন স্থান, কাঁচা বাজার, সরকারি অফিস ও আবাসিক স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
২. এডিস মশার বিস্তাররোধে অফিস ছুটিকালীন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের টয়লেটের কমোড অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে।
৩. নির্মাণাধীন ভবন এবং যেসব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবে না বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যাবে সেসব ব্যক্তি ও স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী বার বার জরিমানা করতে হবে।
৪. প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে প্রতি ওয়ার্ডে সাব-কমিটি গঠন করে তাতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ২০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে অর্ন্তভূক্ত করে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে।
৫. মশকনিধন এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতের স্বার্থে মন্ত্রণালয়, সব সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। সিটি করপোরেশনগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে।
৬. সম্ভাব্য ডেঙ্গু মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ হিসেবে এলজিআরডি মন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের করণীয় নির্ধারণ করে মন্ত্রীর স্বাক্ষরে একটি আধা-সরকারিপত্র পাঠানো হবে।
৭. কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একাধিক উদ্যোক্তা ও আমদানীকারককে কীটনাশক আমদানীর সুযোগ দিলে তা বাজারে সহজলভ্য হবে। এর ফলে মানুষ নিজ উদ্যোগে হস্তচালিত মেশিন দিয়ে নিজের আঙ্গিনার মশক নিধন করতে পারবে।
৮. সম্মিলিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু করবেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবে।
৯. ঢাকার খাল ও নালাগুলো একযোগে পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে এবং স্থাপনাগুলো পরিচ্ছন্ন করতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত বিভাগ, রাজউক এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিতে হবে।
১০. বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘমেয়াদী ছুটির কারণে জনসাধারণ ও যানবাহনের চাপ কম আছে। এই সময় পুরো ঢাকা শহরকে শতভাগ পরিস্কার করার সুযোগ সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে।
১১. স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযান সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।
এনএস/