বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি বাণিজ্য চালু
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৫৫ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২০ বৃহস্পতিবার
একটানা এক মাস ৮দিন বন্ধ থাকার পর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে চালু হলো আমদানি বাণিজ্য। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের কারনে বন্ধ ছিল দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। প্রথম দিনে ভারত পণ্য রফতানি করতে পারলেও বাংলাদেশ কোন পণ্য রফতানি করতে পারেনি ভারতে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিন টার সময় বেনাপোল-পেট্রাপোল লিংক রোডের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতীয় ভূটা, পান, পাটের ও মেসতার বীজ বোঝাই প্রথম ৩ টি ট্রাকে আসা এসব পণ্য ভারতের ট্রাক থেকে বাংলাদেশী ট্রাকে লোড করা হয়। এসময় বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর, বিজিবি, পুলিশসহ সরকারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোক উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে পণ্য চালান লোড আনলোডের সময় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক দুরত্ব ও সুরক্ষা মেনেই কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও তেমন ভাবে পরিলক্ষিত হয়নি। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী ছাড়া কারো শরীরে পিপিই ছিল না। কর্মকর্মকর্তাদের শরীরে পিপিই দুরে থাক অনেকের মুখে হাতে মাস্ক, গ্লোভসও দেখা যায়নি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানির ব্যবস্থাও করা হযনি। এ নিয়ে উভয় দেশের অনেকে সংশয় প্রকাশ করেন।
পণ্যচালান গুলোর বাংলাদেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান উৎস এন্টারপ্রাইজ এবং ভারতের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধন এগ্রো। সিএন্ডএফ এজেন্ড ডিএসইম পেসকো ও সোঁনারগাও নামে দুটি প্রতিষ্ঠান।
আমদানিকারক উৎস এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী উজ্জল রায় বলেন, প্রায় এক মাস ৮ দিন আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর আমদানি বাণিজ্য চালু হলো। সময় মত আমাদের এ পচনশীল মাল যদি গন্তব্যে পৌছাতে না পারি তাহলে লোকশান গুনতে হবে। বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের ব্যাবসায়ী নেতা ও কাস্টমস, বন্দরের সাথে বসে বিশেষ ব্যবস্থায় এ পণ্য আনা হচ্ছে। তবে ভারতীয় কোন পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে না। ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশী ট্রাক বেনাপোল-পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ড থেকে লোড করে নিয়ে আসছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা শামিম হাসান বলেন, দীর্ঘদিন পর বৃহস্পতিবার আবার আমদানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। পঁচনশীল পণ্য হিসেবে ভুট্রা, পাটের ও মেসতা বীজ এবং পান জাতীয় পণ্য এসেছে। এগুলো বন্দরে নিয়ে আজই পরীক্ষন শেষে শুল্কায়ন করা হবে এবং শুল্কায়নের পর পণ্য নিয়ে যাবে নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন. আমরা বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কিছু আমদানি পণ্য নিয়ে আসতে পেরেছি। এরপর আস্তে আস্তে আরও পণ্য বৃদ্ধি পাবে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় আড়াই হাজারের মত পণ্যবাহী গাড়ি আটকে আছে। আমরা সেগুলো পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসব। যারা এখানে কাজ করছে তাদের মাস্ক ও পিপির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে স্বাস্থ্য কর্মীরাও রয়েছে। প্রথম দিন একটু সমস্যা হবে। পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
গত ২২ মার্চ থেকে করোনা ভাইরাসের কারনে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বুধবার আমদানি-রফতানি বাণিজ্য চালুর বিষয়ে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দুই দেশের বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার প্রথম কয়েকটি চালান দেশে প্রবেশ করেছে। ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের কারনে করোনার এ দুর্যোগের সময়েও ভারত থেকে শুরু হলো আমদানি। এতে করে সীমিত আকারে হলেও উপকৃত হবে আমদানিকারকরা।
আরকে//