ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

হাতকড়া পরিয়ে যশোর নেয়া হলো সাংবাদিক কাজলকে 

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:২৭ পিএম, ৩ মে ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০২:৪৮ পিএম, ৩ মে ২০২০ রবিবার

ফটো সাংবাদিক কাজলকে যশোরে নিয়ে যায় বেনাপোল পুলিশ- একুশে টেলিভিশন।

ফটো সাংবাদিক কাজলকে যশোরে নিয়ে যায় বেনাপোল পুলিশ- একুশে টেলিভিশন।

যশোরের বেনাপোল থেকে উদ্ধার হওয়া ফটো সাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালে’র সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ (৩ মে) দুপুরে তাকে হাতকড়া পরিয়ে বিশেষ নিরাপত্তায় নিয়ে যায় পুলিশ। বিজিবি’র দায়ের করা অবৈধ পারাপারের মামলায় তাকে যশোরে পাঠানো হয়েছে। 

এর আগে পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান ও নাভারন সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জুয়েল ইমরান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। স্থানীয় কোন সংবাদকর্মীকে এ বিষয়ে বক্তব্য প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ করে পুলিশ।

পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, তাকে বেনাপোল থেকে যশোর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ তাকে করবেন। তারপর মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকায় পাঠানো হবে নাকি আদালতে পাঠানো হবে এটা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সূত্রটি। 

যেভাবে উদ্ধার হলো চিত্র সাংবাদিক কাজল:
বেনাপোল সীমান্তের সাদিপুরের একটি মাঠের মধ্য থেকে তাকে উদ্ধার করে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের টহলদল। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে চিত্রসাংবাদিক কাজলকে মামলা দিয়ে শনিবার গভীর রাতে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আশেক আলী চিত্রসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘শনিবার মধ্য রাতে বিজিবি‘র টহল দলের সদস্যরা সাদিপুর সীমান্তের একটি মাঠের মধ্য থেকে উদ্ধার করে। অবৈধভাবে ভারত থেকে আসার সময় তাকে আটক দেখানো হয়। রাতে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।’ বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিত্রসাংবাদিক শফিকুল কাজলকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পারাপারের অভিযোগে বিজিবি একটি মামলা দায়ের করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে। 

যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেল কেন্দ্রিক কারবারে জড়িতদের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তাতে আসামির তালিকায় কাজলের নামও রয়েছে। মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর গত ৯ মার্চ শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর হাতিরপুলের নিজ অফিস থেকে বের হন শফিকুল ইসলাম কাজল। এরপর থেকে তার কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তার কোনও সন্ধান না পেয়ে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। 

এদিকে তবে নিখোঁজের ঠিক ৩০তম দিনে (৯ এপ্রিল) সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি বেনাপোলেই চালু হয়েছিল। তখন কাজল নিখোঁজের বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আবদুল লোকমান বলেন, ‘নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি চালু হয়েছিল। লোকেশন দেখিয়েছে বেনাপোল। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ও নম্বরটি চালু থাকার সময় কম হওয়ায় বেনাপোলে কোন অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।’

এমএস/এনএস