একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত, মৃত বেড়ে ১৭৭
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫৯ পিএম, ৩ মে ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০২:৫২ পিএম, ৪ মে ২০২০ সোমবার
দেশে এক দিনে আরও ৬৬৫ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ। এর ফলে প্রাণসংহারি ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫ জন। সেই সঙ্গে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে এই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৭৭ জন।
রবিবার বেলা আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ৬৬৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের পর এটি একদিন সর্বোচ্চ আক্রান্ত। একই সময়ে আরও দুইজন করোনায় মারা যাওয়ায় এই সংখ্যাটা ১৭৭ জন।
মারা যাওয়া দুইজনের মধ্যে একজন শিশু। অন্যজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। দুজনের একজন রংপুর অন্যজন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৫ জনকে, এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এক হাজার ৬৩৭ জনকে। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬০ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৮২ জন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৯ হাজার ৮৭৪ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ১৪৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৯২ হাজার ৫৯২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৭ হাজার ৭৩৯ জন।
গতকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ৭৯০ জনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। আজকের ব্রিফিংয়ে নতুন করে আরও ৬৬৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়, যা একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। তাদের নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা দাঁড়ালো ৯ হাজার ৪৫৫ জনে।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের রোগী বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত মাসের ৮ তারিখে।
সেদিন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ।
তাদের মধ্যে দুইজন ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। অপর একজন তাদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন ব্যক্তি দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। দেশে আসার পর তাদের লক্ষ্মণ ও উপসর্গ দেখা দিলে তারা আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেন। পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।
ইতালি থেকে আসা ওই দুইজন দুইটি আলাদা পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাদের নমুনা সংগ্রহের সময় পরিবারের আরও চারজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই চারজনের মধ্যে একজন নারীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এর পরবর্তী কয়েকদিন ধরে আর নতুন কোন রোগী পাওয়ার খবর জানায়নি আইইডিসিআর।
১৩ মার্চ আইইডিসিআর জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। নতুন রোগী পাওয়া যায়নি।১৮ মার্চ আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এরপর থেকে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা।
এসএ/