করোনা: প্রতিদিনই স্বাভাবিক হচ্ছে যেসব দেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৯ পিএম, ৪ মে ২০২০ সোমবার
উৎপত্তিস্থল চীনের পর করোনা বাসা বাঁধে ইউরোপে। তাণ্ডব চালায় ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে।
এখন পর্যন্ত করোনার শিকার হয়েছেন ইউরোপের প্রায় ১২ লাখ মানুষ। যা যুক্তরাষ্ট্রের একার সমান। আর প্রাণহানি হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি মানুষের।
গতমাসের শেষ সময় পর্যন্ত এসব দেশে করোনা সর্বোচ্চ হানা দিয়েছে। তবে, ৩০ এপ্রিলের পর থেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ভাইরাসটি। এর মধ্যে সবচেয়ে উন্নতির মুখ দেখেছে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও জার্মানি।
বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্যমতে, গত ১০ মার্চের পর গত একদিনে ইতালিতে সর্বনিম্ন মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ে করোনার আঘাতে প্রাণ হারান মাত্র ১৬৪ জন। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ হাজার ২৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত আগের মত নয়। তারপরও নতুন করে দেড় হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। ফলে, মোট আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার ১২২ জনে।
এমন অবস্থায় আজ থেকে লকডাউন আংশিক শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে ইতালি সরকার। তবে, অধিকাংশ বিধি-নিষেধই পূর্বের ন্যায় কার্যকর থাকবে। অবস্থার বেগতিক হলে পুনরায় কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।
একই পথে সহগোত্রীয় স্পেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আবারও সর্বনিম্ন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এদিন ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়। যাতে মোট প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮৮৫ জনে। কমেছে সংক্রমণের হারও। ১ হাজার ৩৮৯ ব্যক্তি গতে একদিনে করোনার কবলে পড়েছেন। এতে করে করোনার শিকারের সংখ্যা সেখানে ২ লাখ ১০ হাজার ৭১৭ জনে ঠেকেছে। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের দেশ।
এমন অবস্থায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্পেন সরকার। আগামীকাল সোমবার থেকেই বেশ কিছু ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কর্মক্ষেত্রগুলোও খুলে দেয়া হবে।
অনেকটা প্রত্যাশার তুলনায় বেশি নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে ফ্রান্সে। রাজধানী প্যারিসসহ অন্যান্য শহরে প্রতিনিয়ত কমতে শুরু করেছে করোনার দাপট। এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেখানে তাণ্ডব চালিয়েছিল করোনা। ক্রমেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে যাচ্ছে ইউরোপের দেশটি।
গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ২৯৭ জন। এ নিয়ে সেখানে প্রাণহানি ২৪ হাজার ৮৯৫ ও আক্রান্ত ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯৩ জনে ঠেকেছে।
দেশটির চিকিৎসকদের দাবি, রোগীদের থেকে নেয়া নমুনা নিয়ে করা নতুন পরীক্ষায় দেখা গেছে ভাইরাসটি গত বছরও ফ্রান্সে উপস্থিত ছিল। এটি ঘটেছে দেশটিতে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের আগেই।
তবে, কিছুটা ব্যতিক্রম উত্তর এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশ রাশিয়া। প্রথম দিকে প্রকোপ দেখা না দিলেও বর্তমানে সেখানে জোরালো আঘাত হানছে করোনা। প্রতিদিনই প্রায় ১০ হাজার করে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায়ও দেশটিতে ১০ হাজার ৬৩৩ জনের শরীরে করোনা চিহ্নিত হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৭ জনে ঠেকেছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৮ জনের। যাতে মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮০ জনে। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ার সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৩৯ জন।
আক্রান্ত হু হু করে বাড়তে থাকায় চাপ বাড়ছে মস্কোর হাসপাতালগুলোতে। আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানী মস্কোতেই সাড়ে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ।
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাজ্যেও। বরিস জনসনের দেশে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বেশ দাপট দেখিয়েছে করোনা। যার প্রকোপে এখন পর্যন্ত সেখানে ২৮ হাজার ৪৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১৫ জন প্রাণ হারান।
অপরদিকে, আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তবে তা আগের তুলনায় কম। গত একদিনে ৪ হাজার ৩৩৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এতে করে মোট আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৯ জন।
অবস্থা কিছুটা বেগতিক সোয়া ১ কোটি মানুষের দেশ বেলজিয়ামে। এখন পর্যন্ত সেখানে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৮৪৪ জন। আক্রান্ত প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। করোনায় মৃত্যুহারের হিসাবে সবার উপরে দেশটি। তবে, পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমেছে আক্রান্ত।
এআই/