বাগেরহাটে ত্রাণ চাওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে মারধর
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৯ পিএম, ৬ মে ২০২০ বুধবার
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রমজান সরদার ও তার মা -ছবি একুশে টিভি।
বাগেরহাটের কচুয়ায় ত্রাণ চাওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির জেরে রমজান সরদার নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে মারধর করেছে নারী ইউপি সদস্যের ছেলে ভিক্টর দাস। আহত রমজান সরদার এখন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (৫ মে) সন্ধ্যায় কচুয়া উপজেলার বাধাল বাজারে শাহাদাতের চায়ের দোকানের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে আহত রমজান সরদারকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অভিযুক্ত ভিক্টর দাস কচুয়া উপজেলার বাধাল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শিপ্রা দাসের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রমজান সরদার বলেন, বৈলপুর বাজার থেকে মাছ বিক্রি করে বাধাল বাজারের শাহাদাতের বন্ধ চায়ের দোকানের সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ ইউপি সদস্য শিপ্রা রানী দাসের ছেলে ভিক্টর দাসসহ তিনজন আমার কাছে আসে। ভিক্টর আমাকে বলে তার মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিস কেন। আমি কোন উত্তর দেওয়ার ও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিক্টর ও অন্য আরেকজন আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। পরে আমার পকেটে থাকা মাছ বিক্রির ১৬ হাজার ৭‘শ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওরা পালিয়ে যায়।
রমজানের বড় ভাই ইমাম সরদার বলেন, ভিক্টর ও তার লোকজন আমার ছোট ভাইকে শুধু ক্ষমতার দাপটে মারধর করল। আমার মা তো মহিলা মেম্বরকে খারাপ কোন কথা বলেনি। শুধু বলেছে করোনা পরিস্থিতিতে কোন ত্রাণ পাইনি আমরা। এতেই যদি মার খেতে হয়। তাহলে আমরা হতদরিদ্র দিনমজুররা কোথায় যাব- বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আহত রমজান সরদারের মা আবিনুর বেগম বলেন, সোমবার বিকেলে বাধাল বাজারে মহিলা মেম্বর শিপ্রা দিদির সাথে আমার দেখা হয়। তাকে বলি করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর আমরা কোন ত্রাণ পাইনি। সুযোগ থাকলে আমাদের কিছু দিয়েন। শিপ্রা দি (দিদি) আমাকে বলেন- তোরা কিছু পাবি না, তোরা আমাকে ভোট দিসনি। যারা ভোট দিয়েছে, যারা আামার পিছনে ঘুরেছে তারা সব কিছু পাবে। আমার বাড়িও যাবি না তোরা। ঠিক আছে যাব না- বলে আমি চলে আসি। এতে আমার কি অপরাধ হয়েছে। এর পরেও আমার ছেলেকে এভাবে মারধর করল। কেন, আমরা গরীব তাই মার খেতে হবে? আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বলেন, ইউপি সদস্য শিপ্রা রানী দাসের ছেলে ভিক্টর একটি নেশাখোর। সে একাধিকবার গাজা খেয়ে এলাকায় মাতলামি করেছে। অনেককে মারধরও করেছে। রমজানের মতো একজন হতদরিদ্রকে মারধরের ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই আমরা।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শিপ্রা রানী দাস বলেন, একটি শালিস বৈঠক নিয়ে রমজান সরদার আমাকে গালিগালাজ করেছে। তাই রমজানকে আমার ছেলে মারধর করেছে। এটি জানার পরে আমি রমজানকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি এবং ঔষধও কিনে দিয়েছি। এরপরও রমজানের মাকে বলেছি রমজান আগে সুস্থ হোক, তারপর আমার ছেলের যা বিচার করার তোমরা করিও।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, মারধরের ঘটনা আমরা শুনেছি। রমজানের পরিবারকে বলেছি, লিখত অভিযোগ দিতে। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
এনএস/