ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

কর্মকর্তা-কর্মচারীর জীবিকার সুরক্ষায় ‘ইএলএসএফওবি’ গঠন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৬ পিএম, ৬ মে ২০২০ বুধবার

সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে আছে ছয় হাজারের বেশি নিবেদিত ইভেন্ট লজিস্টিকস সহায়তা প্রতিষ্ঠান। এই শিল্পের নানা খাতের পাঁচ লাখের বেশি কর্মী রয়েছেন। করোনা ভাইরাসের আক্রমণে ‘কোভিড-১৯’ রোগের প্রাদুর্ভাবে তারা সবাই নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন। লাইট-অ্যান্ড-সাউন্ড, এলইডি-ডিসপ্লে, ভিজ্যুয়াল, জেনারেটর, ক্যামেরা, মঞ্চ নির্মাণ, সাজসজ্জা, ডেকোরেশন ইত্যাদি এই ক্ষেত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অস্তিত্ব সংকটে ‘ইভেন্ট লজিস্টিকস সাপোর্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইএলএসএফওবি)’ গড়ে তুলেছেন। 

ইভেন্ট লজিস্টিকস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তিনটি সংগঠন-‘ভিজ্যুয়াল ইকুইপমেন্ট সার্ভিস প্রভাইডারস ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড (ভিইএসপিবিএস)’, ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড বিজনেস কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেড (এলএসবিএ)’ ও বাংলাদেশ সাউন্ড লাইট অ্যান্ড লজিস্টিকস রেন্টাল কো-অপারেটিভ (বিএসএলএলআর)’র এটি ঐক্যমঞ্চ। ইএলএসএফওবি’র আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছেন ফুয়াদ শিহাব, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, অর্থ সচিব এ জেড মামুন। ২৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি আছে। 

আহবায়ক ফুয়াদ শিহাব বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাসের অংশ আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘কলরেডি’। তার আগে ও পরে আজতক রাষ্ট্রীয়, শিল্প-বাণিজ্য-সংস্কৃতিসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়; সরকারি, বেসরকারী, ধর্মীয়, সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা, সেমিনার; বিয়েসহ সব ঘরোয়া অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব আমরা পালন করছি। আমাদের সবার ঘাম, হাড়ভাঙ্গা শ্রম, একনিষ্ঠ অবদান তেমন করে সরকার, শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ কারোরই নজরে আসেনি, পাশে দাঁড়াননি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দেশব্যাপী করোনাভাইরাসে মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান আয়োজনসহ ইভেন্ট লজিষ্টিক শিল্পের সব ধরনের কার্যক্রম আচমকা বন্ধ হয়েছে। আমাদের সর্বশেষ অনুষ্ঠান ছিল এই বছর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের স্মরণে জয় বাংলা কনসার্ট। তারপর থেকে বিপর্যয়ের পড়েছে আমাদের শিল্পখাত। আর চলতি বছর মুজিববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করতে আমরা গত বছর থেকে এলইডি ডিসপ্লে, স্পিকার, ট্রাস (স্টেজ ইকুইপমেন্ট), গোডাউন ভাড়াসহ নানা প্রয়োজনীয় উপকরণের আগাম বুকিং দিয়েছি। অন্যান্য ক্ষেত্রেও বিপুল বিনিয়োগ করেছি, কিন্তু এখন আমরা প্রায় সর্বশান্ত। এ মুহূর্তে পাঁচ লাখের বেশি কর্মী কর্ম ও রোজগারবিহীন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন খাতে নানা প্রণোদনা দিচ্ছেন। সে সহায়তা থেকে যাতে বঞ্চিত না হই, সেজন্য কর্তৃপক্ষের বিবেচনা ও সজাগ দৃষ্টির আহবান জানাচ্ছি।’

ইভেন্ট লজিস্টিকস খাত সমস্যা জর্জরিত বলে তিনি জানান, ‘আমাদের খাতটি নবীন আধুনিক। সাহায্যের অভাবে দেশের শিল্প তালিকার কোনো ক্যাটাগরিতেও নেই। সরকারি তালিকাভুক্ত হতে না পারায় আমরা ব্যাংকঋণের সুবিধা পাই না। বিরাট ও সম্ভাবনাময় এই শিল্পে অনুদানও নেই। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে শিল্প হিসেবে টিকে থাকা অসম্ভব। স্বপরিচয়ে তালিকাভুক্ত হতে না পারায় ‘সরবরাহকারী’ বা ‘ডেকোরেটর সার্ভিস’ হিসেবে লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। তাতে সম্মানের সঙ্গে কর্ম করে খাওয়া সম্ভব নয়। ফলে ইএলএসএফওবি’র মালিক-শ্রমিকদের দাবী, সংশ্লিষ্ট শিল্প, বাণিজ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমাদের স্বতন্ত্র শিল্পখাত হিসেবে শিল্পনীতির তালিকায় অন্তভুক্ত করে সুনির্দিষ্ট কাঠামোয় ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক। আলাদা ব্যবসায়ী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করি।’ 

এসি