তামাকজাত দ্রব্য বেচাকেনা নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪২ পিএম, ৭ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার
করোনা মহামারির মধ্যে দেশে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের ১০০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বৃহস্পতিবার (৭ মে) এ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তারা। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (প্রগতির জন্য জ্ঞান) প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্টজনদের মধ্যে রয়েছেন, জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সাংবাদিক নেতা এবং টিভি টুডে’র এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, দেশটিভির সম্পাদক সুকান্ত গুপ্ত অলক, বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আবু তাহের প্রমুখ।
চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা লিখেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাক ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং এটি সংক্রমণ সহায়ক—এই বিবেচনায় সব তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তারা। এ ছাড়া তামাকজাত দ্রব্য ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়; যা করোনা সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর এক লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। এই বিপুল জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ ধরনের রোগীর চিকিৎসায় অনেক সময় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থার দরকার হয় এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সুতরাং এই মহামারির মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে এবং এতে করোনাভাইরাস সংকট আরও ঘনীভূত হবে। এই পরিস্থিতিতে মহামারি চলাকালীন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সব তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
আরকে//