করোনায় সিয়াম সাধনা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫১ পিএম, ৮ মে ২০২০ শুক্রবার
করোনায় সিয়াম সাধনা -প্রতিকী ছবি।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লী হিসেবে পরিচিত মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান শুরু হয়েছে গত ২৫ এপ্রিল। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের এই মাসটি মুসল্লীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এ মাস জুড়ে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন তারা। সারা বছর মসজিদগুলোতে মুসল্লীদের যতোটা ভীড় না থাকে, রমজানে তার চেয়ে বেশী ভীড় পরিলক্ষিত হয়। আর জুম্মার সময়টাতে মসজিদে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেকে নামাজ আদায় করে থাকেন।
করোনার প্রাদূর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় মসজিদগুলোতে মুসল্লীদের যাতায়াত সীমিত করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন যে নির্দেশনা দিয়েছিলো তা অনেকটাই শিথীল হওয়ায় আজ শুক্রবার রমজানের দ্বিতীয় জুম্মা মুসল্লীরা মসজিদে গিয়েই আদায় করতে পেরেছেন। বিধি নিষেধ থাকায় গত ১ মে প্রথম জুম্মায় মসজিদগুলোতে মুসল্লীদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়েনি। নির্দেশনার বাইরে অনেক মসজিদে ১০ জনের বেশী মুসল্লীর দেখা মিললেও তা যেন ছিলো অনেক বেশী বেমানান।
এদিকে বিধি মেনে মসজিদে যেকে না পারায় অনেক রোজাদার আক্ষেপের সুরে বলেন- এই তো দেখতে দেখতে ১৪টি রোজা শেষ হয়ে গেলো। মুসল্লীরা রোজা রাখলেও প্রথম কয়েকদিন মসজিদে গিয়ে ওয়াক্তিয় নামাজসহ তারাবির নামাজও সেভাবে আদায় করতে পারেননি। করোনার প্রভাবে এ বছরই প্রথম মসজিদের পরিবর্তে মুসল্লীদের বাসায় বসে তারাবির নামাজসহ সকল ইবাদতে সামিল হতে হয়েছে। তাও আবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
ছোটকাল থেকে দেখেছি রমজানের সময়ে মুসল্লীদের মধ্যে পুরুষেরা দল বেধে মসজিদে গিয়ে আর নারীরা সংঘবদ্ধভাবে বাসার বসে নামাজ আদায়সহ সকল ইবাদতকার্যে অংশ নিতো। অনেকে মসজিদে গিয়েই ইফতার করতো। বড় বড় মসজিদগুলোতে শত শত লোকের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা থাকতো। যা গত বছর পর্যন্ত ভালোভাবেই চলে আসছিলো। দেখেছি, রমজানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ ব্যক্তি পর্যায়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন। কিন্তু এ বছর তাও হচ্ছেনা। প্রতি বছর রমজানের সময় নগরীর বড় বড় খাবারের দোকানসহ, অলিগলিতে ইফতার সামগ্রী বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। প্রথম কয়েকদিন এর ব্যত্যয় ঘটলেও কিছুটা শিথিল হওয়ায় এখন অনেক স্থানে ইফতার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এবারের রোজার মতো অবস্থা আমাদের মুরব্বীরা কেন, তাদের মুরব্বীরাও দেখেছে কিনা সন্দেহ।
ঈদের কেনাকাটার সুবিধার্থে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ মে থেকে স্বল্প পরিসরে দোকান ও শপিংমল খোলা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে আশংকার কথা হচ্ছে- কেনাকাটা না হয় হলো, কিন্তু ঈদের নামাজ কোথায় পড়বো? শিশুকাল থেকে ঈদগাহ গিয়ে জামাতে অংশ নিয়েছি। পত্রিকার পাতায় কোথায় কখন ঈদের জামাত হবে তারও নিউজ থাকতো। এবার কি হবে তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক। মহামারী এই করোনার প্রাদূর্ভাব থেকে আমাদের সকলকে হেফাজত করুন। আমরা ঘরে বসে নিয়মিত রোজা রাখার পাশাপাশি বেশী বেশী ইবাদত করবো। আমার দ্বারা অন্য কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবো। ঈদের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে গেলেও অতিমাত্রায় সাবধানতা অবলম্বন করবো।
লেখক: সাবেক সাধারণ সম্পাদক বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন।
এনএস/