ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

‘সূরা কুরাইশ’র মর্মবাণী ও শানে নুযূল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২৩ পিএম, ১০ মে ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০৪:০৭ পিএম, ১১ মে ২০২০ সোমবার

মাহে রমজানে আমরা বেশি বেশি কোরআন পাঠ করব। চেষ্টা করব অর্থ বুঝে তবেই পাঠ করার। সব সময় কোরআনের সঙ্গে থাকব। কারণ এ মাসেই আল্লাহ মহা পবিত্র আল কোরআন নাজিল করেছেন। এই কোরআন মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও মুক্তির দিশারি বা পথপ্রদর্শক। 

আজ আমরা পবিত্র কোরআন শরীফের ১০৬ নম্বর সূরা ‘সূরা কােরাইশ’ পাঠ করব। সেই সঙ্গে জেনেনিব এর ফজিলত সম্পর্কে।

১০৬. সূরা কােরাইশ
পারা ৩০, আয়াত ৪, রুকু ১ (মাক্কী)

 

বাংলায় আরবি উচ্চরণ
বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
লিঈলা-ফি কুরাইশ। ঈলা-ফিহিম রিহলাতাশশিতাই ওয়াসসাঈফ। ফালইয়া’বুদূরাব্বা হা-যাল বাঈত। আল্লাযীআতা’আমাহুম মিন জূ’ইওঁ ওয়া আ-মানাহুম মিন খাওফ।

মর্মবাণী
দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
অতএব কোরাইশদের নিরাপত্তার জন্যে ২-৩. শীত-গ্রীষ্মের বাণিজ্যযাত্রায় নিরাপদ থাকার জন্যে, তাদের উচিত কাবাঘরের প্রতিপালকের ইবাদত করা।
৪. তিনিই তাদের ক্ষুধার আহার দিয়েছেন, নিরাপত্তা দিয়েছেন ভয়ভীতি হতে।

শানে নুযূল
সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত কুরাইশ শব্দ থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। সূরাটি ‘সূরা ইলাফ’ নামেও ডাকা হয়। উম্মু হানী বিনতু আবূ তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : আল্লাহ তা’আলা কুরাইশদের সাতটি বিষয়ে মর্যাদা দান করেছেন: (১) আমি তাদের মধ্য হতে। (২) নবুওয়াত তাদের মধ্য হতে এসেছে। (৩) কাবাগৃহের তত্ত্বাবধান। (৪) হাজীদের পানি পান করানোর দায়িত্ব পালন। (৫) আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে হস্তীবাহিনী বিরুদ্ধে সাহায্য করেছেন। (৬) উক্ত ঘটনার পর কুরাইশরা দশবছর যাবৎ আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কারো ইবাদত করেনি। (৭) আল্লাহ তা’আলা তাদের বিষয়ে কুরআনে পৃথক একটি সূরা নাযিল করেছেন যাতে তাদের ব্যতীত আর কারো আলোচনা করা হয়নি। অতঃপর তিনি ‘বিসমিল্লাহ’সহ অত্র সূরাটি তেলাওয়াত করেন।

বিষয়বস্তুর বিবরণ
সূরা কুরাইশের মধ্যে মহান আল্লাহ কুরায়েশদের নিকট বায়তুল্লাহর গুরুত্ব তুলে ধরে,  তাদেরকে একনিষ্ঠভাবে কা’বার মালিকের ইবাদতের প্রতি আহবান করা হয়েছে। নিম্নে এ বিস্তারিত আলোচনা করা হল—
নবী এর আগমনের বহু পূর্বকাল থেকেই মক্কার কুরাইশরা বিভিন্ন প্রকার কুসংস্কার ও কা’বা শরীফে অবস্থিত ৩৬০ টি মূর্তির পূজায় আসক্ত ছিল। তা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ তাদের প্রতি বহুবিদ নিয়ামত ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছিলেন শুধু মাত্র কা’বার কারণেই। এমনকি তারা শীতকালে ইয়ামেন ও গ্রীষ্মে সিরিয়া বা সাম দেশে ব্যাবসা বাণিজ্য করতে অভ্যস্ত ছিল। আর পবিত্র কা’বার কারণেই তারা ইয়ামেন ও সিরিয়া নিরাপদে ব্যাবসা বাণিজ্য করতে পারত। তাছাড়া কা’বা শরীফের জন্যই তারা আবরাহ বাদশাহর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। আর এসমস্থ বহুবিদ নিয়ামত তারা প্রাপ্ত হয়েছিল শুধু মাত্র কা’বা শরীফের অধিবাসী বলেই। তাই মহান আল্লাহ আলোচ্য সূরায় কা’বা শরীফের গুরুত্ব তুলে ধরে, তথায় অবস্থিত দেব-দেবীর পূজা-আর্চনা না করে, উক্ত ঘরের প্রভু তথা আল্লহর প্রতি ইবাদত করার আহ্বান করেছেন। 


এসএ/