করোনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পোল্ট্রি শিল্পে ধস
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:২৫ পিএম, ১৬ মে ২০২০ শনিবার
চলমান করোনা সংকট পরিস্থিতিতে ধস নেমেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পোল্ট্রি শিল্পে। লকডাউনের মধ্যে ক্রেতা সংকটে উৎপাদিত ডিম সরবরাহ করতে না পেরে ও মোড়গ পরিচর্যার জন্য সময়মত প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন না পাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন খামারিরা।
পুষ্টিহীনতার অভাব ও মানসম্মত খাবার না পাওয়ায় বিভিন্ন রোগে অনেক মুরগি ইতোমধ্যে মারা গেছে। এতে প্রতিটি খামারই মোটা অংকের আর্থিক লোকসানে পড়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং খামার শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছে তারা। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা যায়, জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে লেয়ার এবং পোল্ট্রির এক হাজারের মতো খামার রয়েছে। যেখানে কর্মরত প্রায় দশ হাজার শ্রমিক। এ শিল্পকে পুঁজি করে অনেকেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেক শ্রমিকের বেকারত্ব দূর হয়েছে। করোনার প্রভাবে এ শিল্পটি বর্তমানে হুমকির মুখে।
বিশেষ করে হ্যাচারি ও লেয়ার খামার শিল্পের ব্যবসায়ীদের এখন চরম দুর্দিন চলছে। লকডাউন থাকায় এ শিল্পের অর্থনৈতিক চাকা ভেঙ্গে পড়েছে। পরিবহন স্বল্পতা ও সময়মত ভ্যাকসিনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ না পাওয়ায় অনেক খামারের বেশীরভাগ মোরগ মারা গেছে। তাই মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন এ শিল্পের সাথে জড়িতরা।
আর সময়মত বেতন না পাওয়ায় খামারে কাজ করা শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। খামারিরা জানিয়েছেন, চলমান লকডাউনের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা না আসায় খামারগুলোতে মোড়গ ও ডিমের দাম উৎপাদন খরচের তুলনায় কমে এসেছে। এতে শ্রমিকদের বতেন পরিশোধসহ খামারের খরচ মেটাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে।
বেশ কয়েকজন খামার মালিক সাথে কথা বললে তারা জানান, এমনিতেই খামার শিল্পটা ঝুঁকি পূর্ণ ব্যবসা। খাবার ও ওষুধের দাম প্রায়ই সময় বেড়ে যায়। বর্তমানে করোনার কারণে খাবার ও ওষুধপত্র আমাদের আনতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এসবের অভাবে আমাদের খামারে অনেক মোড়গ মারা গেছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ শিল্পকে বাঁচাতে সহজ শর্তে ঋণসহ সরকারি সহায়তার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম সাইফুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘চলমান সংকটাবস্থায় ভ্যাকসিন ও খাবার আনতে পরিবহন সংকটের কারণে অনেক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে। সেটা পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে প্রযোজনীয় সহায়তা দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এআই//