ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসছে নাইট্রোজেন সাশ্রয়ী এন পি কম্পাউন্ড সার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:০১ পিএম, ১৬ মে ২০২০ শনিবার

শতকরা প্রায় ত্রিশ শতাংশ নাইট্রোজেন সাশ্রয়ী রাসায়নিক সার বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার জন্য মাঠ পর্যায় প্রদর্শনি খামার করেছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজারস এ্যান্ড এগ্রোকেমিক্যালস লিঃ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে উৎপাদনের লাইসেন্স নিয়ে এন পি কম্পাউন্ড সার বাজারজাতকরণের প্রাথমিক কার্যক্রমগুলো চালাচ্ছে তারা। 

কুমিল্লার বুড়িরচং উপজেলা, নড়াইল উপজেলা, দিনাজপুর উপজেলা, রাজশাহীর পবা উপজেলায় এবং বিরি খামারে প্রদর্শনি করার মাধ্যমে আশানুরুপ ফলাফল পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজারস এ্যান্ড এগ্রোকেমিক্যালস লিঃ এর ‘এন পি কম্পাউন্ড’ নামীয় রাসায়নিক সারটি মূলত কম্পাউন্ড সার, যা মিশ্র সার থেকে ভিন্ন। এই সারে নাইট্রোজেন অবমুক্ত হয় ধীর গতিতে, ফলে গাছে দীর্ঘ সময়ের জন্য নাইট্রোজেন সহজলভ্য হয়। এই সারে নাইট্রোজেন এবং ফসফরাসের আনুপাতিক হার ২ অনুপাত ১ আছে যা জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক এজেন্সি ফাওএর রিপোর্টের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ। 

বর্তমানে কৃষকরা নাইট্রোজেন এবং ফসফরাসের যে অসম ব্যবহার করছেন তাতে ফলন যেমন একদিকে কমছে অন্যদিকে জমির উর্বরতা শক্তিও হারাচ্ছে। তবে আশার বানী এই যে, এন পি কম্পাউন্ড সার ব্যাবহারে এই ক্ষতি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব হবে।   

এন পি কম্পাউন্ড সারে নাইট্রোজেনের কার্যকারিতা ইউরিয়া সারের চেয়ে অনেক ভালো এবং ধীর গতিতে নাইট্রোজেন অবমুক্ত হয় বিধায় গাছ নাইট্রোজেন দীর্ঘ সময়ে ধরে সংগ্রহ করতে পারে। অতিমাত্রায় চাষাবাদের জন্য মাটিতে অম্লত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাকে এই সার রোধ করে। এছাড়াও আরো দুইটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট ক্যালসিয়াম এবং সালফার থাকাতে জিপসাম সারের প্রয়োজন নেই।

মাঠ পর্যায়ে এন পি কম্পাউন্ড সার ব্যবহার করে শতকরা পাঁচ ভাগের উপর ফলন বৃদ্ধির ফলাফল পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ইউরিয়ার সাথে তুলনা করে দেখা গেছে, এই সার ব্যবহারে ৩০% পর্যন্ত নাইট্রোজেন কম ব্যবহার করেও একই ফলন পাওয়া গেছে। খুলনার নোয়াপাড়ায় দশ একর জায়গা জুড়ে বার্ষিক এক লাখ সত্তর হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন কারখানা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজারস এ্যান্ড এগ্রোকেমিক্যালস লিঃ সার উৎপাদনের জন্য স্থাপন করেছে।  

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজারস এ্যান্ড এগ্রোকেমিক্যালস লিঃ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা উৎপাদনে যেতে প্রস্তুত আছে কিন্তু বাজারে আমদানিকৃত এবং সরকারি কারখানা কর্তৃক উৎপাদিত সারের উপর সরকারের যে প্রণোদোনার নিয়ম নীতি আছে তা বেসরকারিভাবে উৎপাদিত সারের উপর প্রয়োগ করা গেলে এই শিল্প বিকাশে তারা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সারে যে প্রণোদনা ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেখানে বেসরকারি সার উৎপাদনের খাতকে সম্পৃক্ত করা গেলে কৃষক সহ দেশীয় শিল্প সুরক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সার আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়সহ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে টিকে থাকতে আমদানি কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি রপ্তানিতে জোর দিতে পারলেই আসবে অর্থনৈতিক মুক্তি। বিজ্ঞপ্তি

এএইচ/