ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালীকচ্ছে ৩০ দোকান সীলগালা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২৫ পিএম, ১৬ মে ২০২০ শনিবার
সীলগালা করার দৃশ্য
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক, বাজার কমিটি, স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ মিটিং করে দোকান, শপিংমল বন্ধ রাখার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের পরও ঈদকে সামনে রেখে দোকান কিছুতেই বন্ধ রাখতে চাচ্ছেন না মালিকরা। তারা কোন না কোনভাবে লুকোচুরি করে তাদের বেচাকেনা চালানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছেন।
এদিকে মার্কেট খোলার খবর শুনে পাগলের মত ছুটে আসছেন এক শ্রেণির ক্রেতা, বিশেষ করে নারীদেরকেই বেশী চোখে পড়ছে। ইতিমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-এর বসানো ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানাও করা হয়েছে বেশ কিছু নারী ক্রেতাকে। উপচেপড়া ভিড়ের কারণে মানা হচ্ছেনা সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্বও। কোলের শিশুসহ চলে আসছেন ঈদ শপিং-এর জন্য, অনেকের মুখে নেই মাস্কটিও।
বাচ্চার জন্য ঈদে নতুন জামা কিনতে আসা কহিনূর বেগমের (৪০) কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল করোনা ভাইরাসের এই সময়ে আপনি বাচ্চাদের নিয়ে এভাবে মার্কেটে আসছেন কেন? এতে তো আপনার এবং বাচ্চাদেরও সমস্যা হতে পারে। জবাবে তিনি বলেন, মার্কেট যদি খোলা থাকে তাহলে আমরা কিতা করমু। খোলা আছে বলেই তো আইছি, বন্ধ থাকলে তো আর আইতাম না।
এভাবেই সরাইল, কালীকচ্ছ, চুন্টাসহ প্রায় প্রতিটি বাজারেই মানা হচ্ছে না সরকারি আদেশ। উপজেলার বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলো খোলা রাখছে ব্যবসায়ীরা। বিপণী বিতানগুলোর একটা দরজার শাটার খোলা রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দোকানীরা, দোকানের ভিতরে একগাদা ক্রোতা সমাগম। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই নেয়া হচ্ছে ব্যাবস্থা, করা হচ্ছে জরিমানা, সীলগালা, জব্দ করা হচ্ছে সরঞ্জামাদি। তবুও যেন তাদের মধ্যে সচেতনতার বালাই নেই।
শনিবার (১৬ মে) সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে এইভাবে বাজারের প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে দেদারসে চলছিল বেচাকেনা। ঠিক এমন সময় হাজির হন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকা। এসময় কাপড়ের দোকান, গার্মেন্টস, টেইলার্স, কসমেটিক, জুতার দোকান, সেলুনসহ অন্তত ৩০টি দোকান সীলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী কর্মকর্তা। একইসাথে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কাপড়ের দোকান খোলা রাখায় কালিকচ্ছ বাজারের ৩ ব্যবসায়ীকে ২২ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন বাজারে কিছু কিছু জায়গায় দোকান খোলা রেখে লোক সমাগম ঘটাচ্ছে। তাতে সামাজিক দূরত্বের যে বিষয়টি তা মানা হচ্ছেনা। আমরা দোকানীদের মাইকিং করে জানানোর পরও তারা তা মানছেনা। তাই কালিকচ্ছ বাজারের কিছু দোকান সীলগালা করে সর্তক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অন্য বাজারের দোকানীরাও সর্তক হবে বলে মনে করি।
এদিকে, এই খবরে উপজেলার সচেতন মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা প্রিয়াংকা।
এনএস/