ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অধ্যাপক মমতাজ বেগম আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ১৭ মে ২০২০ রবিবার

বীর মুক্তিযোদ্ধা, বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও সাবেক এমএনএ অধ্যাপক মমতাজ বেগম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমানের সহধর্মিণী।

শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডি (নর্থ রোড) এর নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মমতাজ বেগম’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোকবার্তায় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেত্রীর অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। এসময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মমতাজ বেগমের সঙ্গে একত্রে ছাত্র রাজনীতি করার স্মৃতি রোমন্থন করেন। 

তিনি আরও বলেন, জাতীয় মহিলা সংস্থার সাবেক এ প্রতিভাধর চেয়ারম্যান স্বীয় কর্মের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক মমতাজ বেগম এডভোকেট ১৯৪৬ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল গণি ভূইয়া ও মায়ের নাম জাহানারা বেগম। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে এমএ দর্শন ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকায় উপাধ্যক্ষ হিসেব দায়িত্ব পালন করেন ও আইনপেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

তিনি ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় মহিলা সংস্থার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদের সদস্য ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য।

অধ্যাপক মমতাজ বেগম দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সদিচ্ছা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত মহিলাদের পূনর্বাসনের জন্য ‘নারী পূনর্বাসন বোর্ড’ গঠিত হলে সেই বোর্ডের পরিচালক হন এবং বাংলাদেশ মহিলা সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের পূর্নবাসনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের সাংসদ (এমপি) হন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ মহিলা ফ্রন্ট এর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হন। তিনি সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জাতীয় আইনজীবী সমিতি, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সমিতি ও সহ-সভাপতি বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) এসোসিয়েশনের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য। এছাড়া লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। রেডক্রস সোসাইটি বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শণ বিভাগ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন-এর আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, নারী প্রগতি সংঘ, নৌ কমান্ডো এসোসিয়েশন ও নারীকন্ঠ থেকে বিভিন্ন সম্মাননা লাভ করেন।
এসএ/