ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে তালিকায় বিত্তশালীরা, আছে অন্য জেলার লোকও

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:৪৪ পিএম, ১৮ মে ২০২০ সোমবার

সুনামগঞ্জের শাল্লায় করোনায় কর্মহীন নিম্নবিত্ত ও হতদরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তার তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে এসব অনিয়ম সংশোধনে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৪নং শাল্লা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের তালিকায় অনিয়মের শেষ নেই। এই তালিকা অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন উপকারভোগীর নাম ঠিক থাকলেও তাদের নামের পাশের মোবাইল নাম্বারটি সংশ্লিষ্ট মেম্বারের আত্মীয়-স্বজনদের।

এছাড়াও ওই তালিকায় অধিকাংশ বিত্তশালীরা স্থান পেয়েছে। স্থান পেয়েছে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মেম্বারের ভাগ্নের নামও। তালিকায় মনুয়া গ্রামের সেমল হোসেন এবং আবুল কাশেম আপন দুই ভাই। তারা গ্রামের ধনী মানুষ এবং মেম্বারের আত্মীয়। 

অপরদিকে, দিলোয়ার হোসেন এবং ওয়াহাবুল মিয়া মেম্বারের আপন দুই ভাই। নয়ন মিয়া মেম্বারের আপন বোনের ছেলে যার বাড়ি আজমিরিগঞ্জ উপজেলায়। 

বিত্তশালীদের মধ্যে রয়েছে আতাবুর মিয়া, ওবায়দুর রহমান, বিলাশ মিয়া। তারা আপন তিনভাই। আপন দুই ভাই একরামুল এবং কামরুল ইসলাম। মহফুজুর রহমান চৌধুরী, সাজেদা বেগম চৌধুরী, ছামিয়া চৌধুরী। 

এই তালিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে উপজেলা জুড়ে। প্রশ্ন উঠেছে ৫৫ জনের একটি তালিকায় যদি এতো অনিয়ম হয় তাহলে সারা উপজেলার চিত্র কি হবে? আর এতে ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে শাল্লা উপজেলার কর্মহীন ও হতদরিদ্র পরিবারগুলো। 

অনেকেই বলছেন, যেহেতু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করার কথা, তাই এই সুযোগে ইউপি সদস্য তার নিজের স্বজনদের মোবাইল নম্বরজুড়ে দিয়েছেন সুবিধাভোগীর নামের পাশে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনুয়া গ্রামের একজন বলেন, ‘তালিকায় অধিকাংশ মানুষ মেম্বারের আত্মীয় স্বজন। আর বলয় সৃষ্টি করার জন্য গ্রামের বিত্তশালীদের নাম তালিকায় দেওয়া হয়েছে।’ 

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে তদন্তকারী কর্মকর্তা মকন্দ দাস এ প্রতিবেদককে জানান, ‘আমরা তদন্ত করে অনেক ফোন নাম্বার ঠিক করে দিয়েছি। আর একজনের বাড়ি অন্য উপজেলায় পেয়েছি। তবে বিত্তশালীদের নাম পরিবর্তনের কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি।’

অভিযুক্ত শাল্লা ইউপির ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার সাজু মিয়ার সঙ্গ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

এ ব্যাপারে শাল্লা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী বলেন, ‘৫নং ওয়ার্ডের তালিকায় কিছু অনিয়মের খবর পেয়েছি। এগুলো সংশোধনের কাজ চলছে।’

আর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল মুক্তাদির হোসেন মুঠোফোনে জানান, ‘কিছু কিছু অনিয়মের তথ্য পেয়েছি। যা সংশোধনের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে ট্যাগ হিসেবে নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা মাঠে কাজ করছে। তালিকায় বিত্তশালীদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিত্তশালীরা এ আর্থিক সহায়তা পাবে না।’

এআই//