ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

তরুণদের মৃত্যুঝুঁকি কমাতে তামাক নিষিদ্ধের দাবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৭ পিএম, ১৮ মে ২০২০ সোমবার

করোনা মহামারীর সময়ে তরুণদের রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাময়িকভাবে তামাক নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব থিয়েটার আর্টস (বিটা), কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ইলমা।

সোমবার (১৮ মে) সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রোগতত্ত্ব বিভাগ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ গবষেণা কেন্দ্রে (আইইডসিআির) এর ওয়েবসাইটে তুলে ধরা তথ্যমতে, বাংলাদেশে নারীর চেয়ে পুরুষদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেশি। তবে পুরুষদের মধ্যে তরুণদের একটি বিশাল অংশ করোনায় আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে দেশে বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণ বলছে, ২১-৩০ বছর বয়সীদের করোনা শনাক্ত হচ্ছে বেশি। এ জনগোষ্ঠীর ২৬ শতাংশই করোনা আক্রান্ত। আইইডসিআির প্রকাশিত এক ইনফোগ্রাফরে তথ্য নিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, তামাক সেবনকারীদের আক্রান্তের হার বেশি হওয়ার কারণ হলো তাদের ফুসফুস দুর্বল থাকে। ধূমপান ও অন্যান্য ধোঁয়াবিহীন তামাকে অভ্যস্ততার কারণে তরুণদের ফুসফুস দুর্বল থাকে। করোনা ভাইরাস প্রথমেই শ্বাসতন্ত্রে আঘাত হানায় তরুণরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে  বিভিন্ন দেশ এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাক ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া তামাকজাত দ্রব্য ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, যা করোনা সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সতর্কতা আমলে নিয়ে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বতসোয়ানা ইতোমধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে এই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর অনুরোধ জানানো হয় বিবৃতির মাধ্যমে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। এই বিপুল জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ ধরণের রোগীর চিকিৎসায় অনেক সময় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থার দরকার হয় এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সুতরাং এই মহামারির মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মকভাবে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে এবং এতে করোনাভাইরাস সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে। 

এই পরিস্থিতিতে মহামারি চলাকালীন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

এনএস/