ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিপদ সংকেতেও মোংলায় নেই কোন প্রস্তুতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ১৮ মে ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৯:০৭ পিএম, ১৮ মে ২০২০ সোমবার

আশ্রয়কেন্দ্রের গেটে তালা- ছবি একুশে টিভি।

আশ্রয়কেন্দ্রের গেটে তালা- ছবি একুশে টিভি।

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ দেশের উপকূলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া দপ্তর। সোমবার (১৮ মে) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার বিকেল নাগাদ আঘাত হানতে পারে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি হওয়ার পরও মোংলা পৌর শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো এখনও খোলা হয়নি। কেন্দ্রগুলো খুলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কথা থাকলেও তাতে এখনও তালা ঝুলছে। সোমবার (১৮ মে) বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার কানাইনগর, চালনা বন্দর মডেল বিদ্যালয়, দিগন্ত প্রকল্প স্কুল, আরাজী মাকোরডোন, চালানা বন্দর ফাজিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে সবগুলোর দরজায় তালা মারা। 

যদিও এ অবস্থায় মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান দাবি করেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে পৃথক কন্ট্রোল রুম। উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসব সাইক্লোন শেল্টারগুলোকে ঝাড়ু দিয়ে ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার জন্য নির্দেশ দেয়া হলেও বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সোমবার দুপুরে কয়েকটি সাইক্লোন শেল্টারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পরিস্কার তো দূরের কথা, অধিকাংশ সাইক্লোন শেল্টার ভবনের গেট ও দরজায় তালা অবস্থায় পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, করোনা পরিস্থিতির আগ থেকেই এসব আশ্রয়কেন্দ্র যেমন তালাবদ্ধ ছিল, এখনও তেমন আছে। কেউ আসেনি পরিস্কারও করেনি। আর তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকলে আশ্রয়কেন্দ্রে কে আসবে আশ্রয় নিতে। এ নিয়ে তারা আতংকে রয়েছেন বলেও জানান। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী উত্তাল থাকলেও স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে মোংলাসহ সুন্দরবনসহ আশপাশ উপকূলীয় এলাকা জুড়ে। তবে এ অঞ্চলে প্রচন্ড গরম ও তাপদাহ বিরাজ করছে। 

এদিকে স্বাভাবিক আবহাওয়ার দরুণ মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণের কাজ চলছে যথারীতি। মোংলা বন্দরে কয়লা ও ক্লিংকারবাহীসহ মোট ১১টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে এবং স্বাভাবিক পণ্য ওঠানামার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বন্দরের হারবার বিভাগ। 

বন্দরের হারবার মাষ্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে জরুরী কন্ট্রোল রুম খুলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্ভাব্য ঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া অবস্থা বুঝে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

অন্যদিকে নদীতে দুপুরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়নি। তারপরও বন্দর কেন্দ্রিক চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান ও সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। মোংলা ও পশুর নদীর পূর্ব পাড়ে কয়েকশ’ পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ ও ট্যুরিষ্ট বোড নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের বিভিন্ন খালেও বিভিন্ন নৌযান নিরাপদে নোঙ্গর করে রয়েছে। 

এনএস/