ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

আক্রান্তে যুক্তরাজ্যকেও ছাড়াল ব্রাজিল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২০ এএম, ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:২০ এএম, ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলবার

নিরব ঘাতক করোনা ভাইরাস এবার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে বাসা বাঁধছে দক্ষিণ দেশ ব্রাজিলে। প্রতিদিনের রেকর্ড আক্রান্তে ইতালি-স্পেনের পর এবার ইউরোপের আরেক দেশ যুক্তরাজ্যকেও ছাড়িয়েছে দেশটি।

এমন অবস্থায় ভেঙে পড়তে বসেছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ শহর সাও পাওলোসহ কয়েকটি রাজ্যে দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। প্রতিদিনিই হাজার হাজার আক্রান্তে ৯০ শতাংশ হাসপাতালগুলোর বেডই পূর্ণ। অন্যদিকে, কম পরীক্ষা করায় শনাক্ত কম হচ্ছে বলে মনে করছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।  

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্য বলছে, দেশটিতে গত একদিনে নতুন করে ১৪ হাজার ২৮৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে করে আক্রান্ত বেড়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬৮ জনে পৌঁছেছে। 

এতে করে করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে গেল লাতিন আমেরিকার দেশটি। এর আগে মৃত্যুপুরী ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানিকে ছাপিয়ে যায় ব্রাজিল। আক্রান্তে তিনে থাকা ইউরোপীয় স্পেনে নিয়ন্ত্রণে এখন করোনা। তাই, অবস্থার উন্নতি না হলে আগামী ৩৬ ঘণ্টায় স্পেনকেও ছাড়িয়ে যেতে বোলসোনোরের দেশ। 

অপরদিকে, প্রাণ গেছে আরও ৭৩৫ জনের। এ নিয়ে ভাইরাসটির আঘাতে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ৮৫৩ জনে ঠেকেছে সেখানে। প্রথমদিকে সুস্থতার হার বাড়লেও প্রতিদিনেই রেকর্ড আক্রান্তে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। বিশেষ করে সাও পাওলোয় অবস্থা ভয়াবহ।  

বিবিসি বলছে, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও নেই জরুরি অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।’ 

এর আগে সাও পাওলোর মেয়র ব্রুনো কভোস বলেন,‘জরুরি ভিত্তিতে নতুন বেডের ব্যবস্থা না করতে পারলে অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, একেবারেই ভেঙে পড়বে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা।’ 

তিনি বলেন, ‘সাও পাওলোর হাসপাতালগুলোতে অনেক আগেই ৯০ শতাংশই রোগীতে পূর্ণ হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের আগে নতুন রোগী ভর্তি অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সাও পাওলোয়। সেখানে ৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা।’

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘পরীক্ষা সীমিত হারে করার কারণে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। বেশি সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ হবে।’

তবে, এতকিছুর পরও হুশ ফেরেনি প্রেসিডেস্টে বোলসোনারোর। এখন পর্যন্ত অনেকটা স্বাভাবিক ব্রাজিলের জীবনযাত্রা। তবে, বেশির ভাগ রাজ্যের গভর্নর নিজ নিজ সিদ্ধান্তানুযায়ী লকডাউন পালন করছে। 

দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজারের বেশি মানুষের দেহে বাসা বাঁধছে ভাইরাসটি। তারপরও জরুরি অবস্থার ঘোষণাার পক্ষপাতি নন বোলসোনারো। আর এ নিয়ে গত একমাসে দুই স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ দেখেছে দেশটির জনগণ। সবশেষ গত শুক্রবার নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেলসন তাইশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত হতে না পারায় পদ থেকে সরে যান। 

এআই/ এসএ/