শেষ রমজানের ফযিলত
প্রকাশিত : ১৬:২০, ২১ মে ২০২০
আমাদের উপর আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দয়া ও অনুগ্রহ কত অপরিসীম, আমরা এটা কল্পনাও করতে পারি না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কতভাবে যে বান্দার প্রতি মমতা ও ভালোবাসার আচরণ করেন, এসব আমরা ভেবেও শেষ করতে পারবো না।
বছরের বারো মাসের মধ্যে একটি মাস হচ্ছে রমজান। এ মাসকে আল্লাহ বিশেষভাবে মর্যাদাবান করেছেন। অন্যান্য মাসের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তেমনিভাবে রমজানের দুই দশকের তুলনায় শেষ দশকে আল্লাহ তাআ’লা বিশেষ ফজিলত রেখেছেন। এই দশকে বান্দাদের উপর আল্লাহর দয়া ও করুণা অঝোর ধারায় বর্ষিত হয়ে থাকে।
হাদীসের কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী এই শেষ দশকেই লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে আল্লাহ বলেছেন, এই শেষ দশকেরই কোনো এক রাত হয়ে থাকে। এই জন্য আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দশ দিনের আমলের বিষয়ে অত্যন্ত যত্নবান হতেন।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ দশকে আমল-ইবাদতের এত সাধ্য-সাধনা করতেন যা রমজানের অন্য দিনগুলোতে করতেন না। সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৭৫
আমরা এই শেষ দশকেরও শেষ প্রান্তে এসে পড়েছি। আগামীকাল জুমাতুল বিদা। জুমাতুল বিদা অর্থ শেষ শুক্রবার। মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি আমাদের সমাজে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। যদিও পরিভাষাটি কোরআন বা হাদিসের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না।
তারপরও মোবারক মাস রমজানের শেষ জুমার দিন হিসেবে এর গুরুত্ব কম নয়। রমজান আর জুমা একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে করে তুলেছে সীমাহীন মহিমাময়।
উম্মতে মোহাম্মাদীর জন্য মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে বছর ঘুরে আসা মাহে রমজান আর তার সঙ্গে যুক্ত সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন ইআওমুল জুমা। তাই জুমাতুল বিদায় প্রত্যেকটা মুমিন মুসলমানের বিশেষ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রব বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি নেক-আমলের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত দেওয়া হয় শুধু রোজা ছাড়া। কেননা রোজা শুধুই আমার জন্য, আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো।
রমজানের শেষ প্রান্তে আমাদের সবার করণীয়, এখন আমরা যেন রমজানের ফযীলত অর্জনের ব্যাপারে আরো বেশি মনোযোগী হই, আরো বেশি তৎপর হই।
এই সময় বান্দা দুনিয়ার সব চিন্তা বাদ দিয়ে সব ভুলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করবে, বেশি বেশি তিলাওয়াত, যিকির ও নফল নামাজের বিষয়ে যত্নবান হবে, তাওবা-ইস্তিগফারের বিষয়ে, নিজের গুনাহের মার্জনার ব্যাপারে বেশি বেশি আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করবে।
আজ রমজানের ২৭তম দিন। এ দিনটিতে চোখের পলকে পুলসিরাত পার করে দেওয়া হয়। সমনে আর ২ থেকে ৩টি রমজান রয়েছে। ২৮তম রমজানে জান্নাতের নেয়ামত দ্বিগুন করা হয়। ২৯তম রমজানে এক হাজার কবুল হজ্জের সাওয়াব প্রদান করা হয়। আর ৩০তম রমজানে পুরা রমজানের ফজিলত দ্বিগুন করে দেওয়া হয়। তাই বাকি যে কয়টি রমজান রয়েছে তাতে আমরা আরও বেশি বেশি ইবাদতে যত্নবান হই।
বস্তুত, ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির যে সুযোগ বছরের এ মাসটিতে মুমিনের জন্য থাকে, তা সারাবছর আর কখনো পাওয়া যায় না। তাই তো প্রত্যেকের উচিত বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে নাজাতের পথ প্রশস্ত করা। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে রমজানের ওসিলায় মাফ করুন। রহমত দান করুন। আমিন।
এসএ/