কৃতজ্ঞতা বিপদে স্থিরতা ও প্রশান্তি আনে
প্রকাশিত : ১৫:৪২, ২০ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৬:১১, ২০ মে ২০১৯
মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন মুষড়ে যায় ও যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। অনেক সময় মুখে কষ্টের হাঁসি বজায় রেখে অন্তরে টেনশনের আগ্নেয়গিরি পুষে রাখে। এ আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। এসব থেকে মুক্তির পথ হলো কৃতজ্ঞতা।
যখন টেনশন চলতে থাকে তখন শরীর থেকে এড্রেনেলিন, নরএড্রেনেলিন, করটিসল হরমোন নিঃসৃত হয়ে মাংসপেশি উত্তেজিত হয়, রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়, রক্ত জমাট বাধার প্রবণতা বেড়ে যায়, হৃৎপিণ্ডের করোনারী ধমনী সংকুচিত হয়, হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষয় হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানসিক অস্থিরতা, ডিপ্রেশন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক এবং বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যায়। এমন কোন মানুষ পৃথিবীতে নেই যে বিপদ বা সমস্যার সম্মুখীন হয়নি।
বিপদ ও সমস্যা জীবনের অংশ। বিপদ থেকে পালানো যাবে না। তবে দুঃখ-বিপদ যাতে অন্তরকে স্পর্শ করে অশান্ত না করে তোলে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই অসুস্থতা থেকে বাঁচতে হলে টেনশনের ছোঁচল থেকে মনপ্রাণকে বাঁচাতে হবে। টেনশন বা বিপদ যাতে মনকে আক্রান্ত না করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
যখনই কোন বিপদ আসে মনকে স্থির করুন, স্রষ্টা কী কী নেয়ামত দিয়েছেন তা চিন্তা করুন। আপনার ভেতর সম্ভাবনার দিকগুলো অবলোকন করুন। আপনি যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন তার প্রতি দৃষ্টি দিন। সৃষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতায় চোখে অশ্রু এসে যাবে। টেনশনের আগুনও নিভে যাবে এবং মনে প্রশান্তির সুবাতাস বইতে থাকবে।
বিপদে পড়ে কিভাবে কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে প্রশান্তচিত্ত থাকতে হয় তা আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসূল (সা.)কে শিখিয়ে দিয়েছেন : ‘সুতরাং তারা যা বলে সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য্য ধারণ করো এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার প্রতিপালকের সকল প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো, রাত্রিকালে ও দিবাভাগে যাতে তুমি সন্তুষ্ট হতে পার।’ (সূরা ত্বাহা ২০/১৩০)
যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন সমস্যা থাকবে, বিপদ থাকবে, টেনশন থাকবে। আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে কৃতজ্ঞতার ঢাল দিয়ে তা প্রতিহত করে বাঁচতে হবে।
(শোকরিয়া, প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের রাজপথ গ্রন্থ)
এএইচ/