আল্লাহর উপর ভরসা সম্পর্কে কুরআন হাদীস
প্রকাশিত : ১৪:৪৭, ২৪ মে ২০১৯
‘তাওয়াক্কুলের’ অর্থ হলো আল্লাহকে নিজের অভিভাবক নিযুক্ত করা এবং তাঁর উপর পূর্ণভাবে ভরসা করা। অভিভাবক তাকেই বলে যিনি তার অধীনস্ত লোকের কল্যাণের কথা চিন্তা করেন এবং অকল্যাণ হতে বাঁচিয়ে রাখেন। হাত-পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকার নাম আল্লাহর উপর ভরসা (তাওয়াক্কুল) নয়, বরং আল্লাহর দেয়া সুযোগ সুবিধা ও উপায় উপকরণসমূহ কাজে লাগিয়ে ফলাফলের জন্য তাঁর উপর নির্ভর করার নামই হচ্ছে তাওয়াক্কুল।
আল্লাহর উপর ভরসা সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ বলেন : ‘আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, এবং তিনিই সর্বোত্তম কর্মকর্তা।’ (আলে-ইমরান ১৭৩)
‘(হে রাসূল) বলুন, আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। তাওয়াক্কুলকারীরা তাঁর উপরই নির্ভর করে।’ (যুমার ৩৮)
‘আমি আমার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করছি। নিশ্চয় বান্দারা আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে।’ (মুমিন ৪৪)
‘আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যা তাঁর পূর্ণ আয়ত্ত্বাধীন নয়।’ (হুদ ৫৬)
‘আপনিই আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে। আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান করুন এবং আমাকে স্বজনদের সঙ্গে মিলিত করুন।’ (ইউসুফ ১০১)
‘তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কতই না উত্তম মালিক এবং কতইনা উত্তম সাহায্যকারী।’ (হজ ৭৮)
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।’ (তালাক ৩)
আল্লাহর উপর ভরসা সম্পর্কে হাদীস : হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি উট বেঁধে রেখে আল্লাহর উপর ভরসা করব, না বন্ধনমুক্ত রেখে? তিনি বললেন, উট বেঁধে নাও, অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা কর। (তিরমিযি)
উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, তোমরা যদি সত্যিকারভাবেই আল্লাহর উপর ভরসা কর তবে তিনি পাখিদের মতই তোমাদের রিযিকের ব্যবস্থা করবেন। ভোরবেলা পাখিরা খালি পেটে বেরিয়ে যায় এবং সন্ধ্যা বেলা ভরা পেটে ফিরে আসে। (তিরমিযি)
ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত ইব্রাহিম (আ.) যখন অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তখন বলেছিলেন, ‘হাসবুনাল্লাহ ওয়া’ নি’মাল ওয়াকীল (আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম পৃষ্ঠপোষক)। এ বাক্যটি মুহাম্মদ (সা.) বলেন : যখন লোকেরা (মুসলমানদের) বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য লোকরা (শত্রুবাহিনী) একতাবদ্ধ হয়েছে তাদের ভয় কর। (এ হুমকি) মুসলমানদের ঈমান আরো বৃদ্ধি করে দেয় এবং তারা বলে ‘হাসবুনাল্লাহ ওয়া নি’মাল ওয়াকীল’ (আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম পৃষ্ঠপোষক)। (বুখারী)
(কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ)
এএইচ/