নারীর অধিকার সম্পর্কে কুরআন হাদীস
প্রকাশিত : ১৫:০৪, ২৬ মে ২০১৯

মুসলিম সমাজে নারীর মর্যাদা দান হযরত মুহাম্মদ (সা.) তথা ইসলামের একটি উল্লেখযোগ্য সংস্কার। ইসলামের পূর্ব যুগে অন্য কোন ধর্মই নারীকে উপযুক্ত মর্যাদা দানের ব্যবস্থা করেনি। প্রাক ইসলাম যুগে আরবের সামাজিক ও নৈতিক অবস্থা এত নিম্নস্তরে ছিল যে, কন্যা সন্তানের জন্ম ছিল আরব সমাজে অভিশাপ স্বরূপ। এ অভিশাপ এড়াবার জন্য পিতা তার কন্যাকে জীবন্ত কবর দিত। ইসলাম এ ঘৃণ্যতম অবস্থা হতে নারী জাতিকে কল্যাণময়ী ও পূণ্যময়ী রূপ দিয়ে গৌরবের উচ্চস্থানে উন্নত করে।
নারীর অধিকার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন : ‘হে ঈমানদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল নয় এবং তাদেরকে আটকে রেখো না। যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ, তার কিয়দংশ নিয়ে নাও, কিন্তু তারা যদি কোন প্রকার অশ্লীলতা করে! নারীদের সঙ্গে সদভাবে জীবন যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়তো তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ অনেক কল্যাণ রেখেছেন।’ (নিসা ১৯)
‘তারা হচ্ছে তোমাদের জন্যে পোশাক এবং তোমরা হচ্ছ তাদের জন্যে পোশাক।’ (বাকারা ১৮৭)
‘পুরুষ বা স্ত্রী যে লোক নেক আমল করবে ঈমানদার হয়ে সে বেহেশতে দাখিল হতে পারবে, এ ব্যাপারে কারো প্রতি এক বিন্দু জুলুম করা হবে না।’ (নিসা ১২৪)
‘স্ত্রীদেরও তেমন অধিকার রয়েছে যেমন স্বামীদের রয়েছে তাদের উপর এবং তা যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।’ (বাকারা ২২৮)
‘তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে স্ত্রীগণকে তাদের প্রাপ্য মহর দিয়ে দাও।’ (নিসা ৪)
‘তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে অবশ্যই ভয় করে চলবে।’
নারীর অধিকার সম্পর্কে হাদীস : হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম, যে তার পরিবার-পরিজনের নিকট উত্তম, আমি আমার পরিজনের কাছে তোমাদের সকলের চেয়ে উত্তম, আর তোমাদের কোন সঙ্গী যখন মৃত্যুকরণ করবে। তখন তাকে তোমরা ক্ষমা করে দিবে। (অর্থাৎ তার সম্পর্কে খারাপ উক্তি করবে না)। (তিরমিযি, দারেমী)
হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি, যার চরিত্র উত্তম এবং যে তার পরিবার-পরিজনের (স্ত্রী-পুত্রদের) প্রতি সদয়। (তিরমিযি)
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, কোন ব্যক্তির ঘরে কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে যেন তাকে জাহেলিয়াতের যুগের ন্যায় জীবিত কবর না দেয় এবং তাকে তুচ্ছ মনে না করে, আর পুত্র সন্তানকে উক্ত কন্যা সন্তানের উপর প্রাধান্য না দেয় তাহলে আল্লাহ তাকে বেহেশত দান করবেন। (আবু দাউদ)
হাকিম ইবনে মুয়াবিয়া (রা.) তার পিতা মুয়াবিয়া (রা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করেছিলাম হে আল্লাহর রাসূল, স্বামীর উপর স্ত্রীর কি কি অধিকার রয়েছে? তিনি বললেন, তার অধিকার হলো যখন তুমি খাবে তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যখন যে মানের কাপড় পড়বে তাকেও সে মানের কাপড় পড়াবে। তার মুখে আঘাত করবে না। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করবে না, গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করবে না। (আবু দাউদ)
(কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ)
এএইচ/