কুরআন হাদীসের আলোকে তাহাজ্জুদ নামাজ
প্রকাশিত : ১২:১৫, ২৭ মে ২০১৯
রাত্রি দ্বি-প্রহরের পর যাবতীয় আরাম-আয়েশ ও সুখময় নিদ্রা ত্যাগ করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে নামাজ আদায় করা হয় তাকে তাহাজ্জুদ নামাজ বলে। মহানবী (সা.) এ নামাজকে অতিরিক্ত নামাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এরই বিনিময়ে মহান আল্লাহ মহানবী (সা.)কে মাকামে মাহমুদে পৌঁছাবেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘হে মুহাম্মদ! আপনি নিদ্রা থেকে উঠে রাত্রির কিয়দংশ থাকতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ুন, ইহা কেবলমাত্র আপনারই জন্যে অতিরিক্ত করা হয়েছে। সম্ভবত এরই বিনিময়ে আপনার প্রভু পরওয়ারদিগারে আলম আপনাকে প্রশংসিত স্থান দান করবেন।’ (বণী ইসরাইল ৭৯)
‘হে চাদরাচ্ছাদিত মুহাম্মদ! রাত্রির অধিকাংশ সময় দাঁড়িয়ে আমার উপাসনা করুন। (যদি তাতে সমর্থ না হন তবে) রাত্রির অর্ধাংশ অথবা কিছু বেশি বা কম সময় দাঁড়িয়ে নামাজে ধীরে ধীরে সুমিষ্ট সুরে মহাগ্রন্থ কুরআন তিলাওয়াত করুন। অর্থাৎ রাত্রির কিয়দংশ সময় দাঁড়িয়ে মহাগ্রন্থ কুরআন পাঠের সঙ্গে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করুন।’ (মুযযাম্মিল ১-৪)
তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে হাদীস
হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী করীম (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজে এত অধিক দাঁড়ালেন যে, তাঁর দু’পায়ের পাতা ফুলে গেল। তখন বলা হল, হুজুর আপনি কেন এরূপ করেন? অথচ আল্লাহ তো আপনার অগ্র পশ্চাতের যাবতীয় গোনাহ মাফ করে দিয়েছেন। হুজুর (সা.) জওয়াব দিলেন, আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাহ হব না? (বুখারী, মুসলিম)
হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলে করীম (সা.) বলেছেন, যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকে, তখন স্বয়ং আমাদের প্রভু পরওয়ার দেগার দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবং বলতে থাকেন, ওগো! কে আছ, যে (এ সময়) আমাকে ডাকবে! আমি তার ডাকে সাড়া দিব। ওগো! কে আছ, যে আমার কাছে কিছু চাবে, আমি তাকে তা দিয়ে দিব। ওগো! কে আছ, যে এ সময় আমার কাছে গুণাহ হতে ক্ষমা চাবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। (বুখারী, মুসলিম)
হযরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই রাতের ভেতর এমন একটি সময় আছে, যদি কোনো মুসলমান ওই সময়টি পায়, আর তখন দুনিয়া আখিরাতের কল্যাণ হতে কোনো কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দেন। আর এ সময়টা প্রতি রাতেই আসে। (মুসলিম)
(কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ)
এএইচ/