রমজানের প্রতিজ্ঞা
প্রকাশিত : ১৫:১০, ৮ মে ২০২০
রাব্বুল আলামীন ফেরেশতাদের চেয়েও বেশি পছন্দ করেন মানুষকে। মানুষ ভুল করে আবার বিশ্বাসের পথে ফিরে আসে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। এতেই সৃষ্টিকর্তা খুশি হন। বান্দা ভালো থাকুক, তার কল্যাণ হোক এর জন্যই স্রষ্টার সব সৃষ্টি। রমজানে ক্ষমা পাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে কল্যাণের পথে প্রবাহিত করি।
আল্লাহর সৃষ্টি ভূমিতে তার বান্দা লালিত-পালিত হয়ে কর্ম বা আবাদের মাধ্যমে জীবনকার্য পরিচালনা করতে পারে। একটু তাকান এই ভূমিতে আল্লাহ কি দেননি? জীবন ধারণের জন্য ফলমূল, নানা ধরনের খাদ্য, পানি, নানা ধরনের গাছপালা ও আবাসস্থল সবই রয়েছে ভূমিতে। বাতাস দিয়েছেন, এর মধ্যে অক্সিজেনের সম্ভার ঘটিয়েছেন। কি মহামূল্যবান অক্সিজেন, বান্দা পাচ্ছে বিনামূল্যে।
নিজের মস্তিষ্কের দিকে তাকান, সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে কত দূরের জিনিস নিয়ে ভাবতে পারছেন। অনেক বছরের পুরনো ঘটনা মনে আসছে, অনেক মূল্যবান জিনিস সৃষ্টি করছে, তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে পারছে, লেখাপড়ার মাধ্যমে জ্ঞানী বানিয়ে কর্মে ঢুকিয়েছে। ১০০ বছরের জীবন যদি হয়, এই মস্তিষ্কই আপনাকে পরিচালিত করছে। তাই এই মস্তিষ্ক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে অবনমিত হোক স্রষ্টার সামনে।
চোখ, মুখ, হাত-পাসহ বিভিন্ন অঙ্গের দিকে তাকান, কী চমৎকার কাজ করছে। এই অঙ্গগুলোকে সৎকর্মে, সৎ উপার্জনে, প্রতিবেশির পাশে এবং গরীবের সাহায্যে কাজে লাগাই।
এতকিছু দিয়ে আল্লাহ শুধু দেখেন বান্দা কি করছে, নিজের কল্যাণের পথে আছে না বিপদগামী। বিপদগামী হলেও সুযোগ রেখেছেন ফিরে আসার। এখানে ক্ষমার অপশন রেখেছেন। শুধু বান্দাকে চাইতে হবে। চাওয়াটা হতে হবে বিনয়ের সঙ্গে। আর ওই পথে না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা। ফেরেশতারা কোন পাপ কাজ সঙ্গে সঙ্গে তালিকাভুক্ত করে না। দেখে বান্দা তার প্রভুর কাছে এর জন্য ক্ষমা চায় কি না।
রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত বা ক্ষমার অংশ। এই সময়ে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমার মাধ্যমে নিজের অপরাধগুলো পরিশুদ্ধ করে নেই। সামনে এই সুযোগ আপনি পাবেন তার কিন্তু গ্যারান্টি নেই।
পবিত্র রমজানের প্রতিটি মুহূর্তের মধ্যে এত বেশি বরকত আছে যে, এই মাসে করা নফল কাজগুলো ফরজ কাজের মর্যাদা পায়, আর ফরজ কাজগুলো ৭০ গুণ অধিক মর্যাদা পায় (বায়হাকি)। অন্যায় ও পাপকাজ থেকে দূরে থাকতে রোজা ঢালস্বরূপ। যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীত ও বর্তমানের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।
রমজান মুমিনের জন্য কাঙ্ক্ষিত সফলতা লাভের জোরালো হাতছানি। যারা পাপাচারের মাধ্যমে জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন, রমজান তাদের ক্ষান্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। পাপের খনিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বান্দাকেও এ মাসের বরকতে মাফ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন মহান রাব্বুল আলামিন। রমজানের প্রাপ্তি ও সুফল নিশ্চিত হওয়ার পূর্বশর্ত হলো, এ মাসের দাবি যথাযথভাবে আদায় করা। রমজানের বাঁকা চাঁদ পাপমুক্ত থাকার সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে মুমিনজীবনে সফলতা আসবেই। যারা এত সুযোগ পাওয়ার পরও সাফল্য নিশ্চিত করতে পারল না, তারা সত্যিই হতভাগা।
আল্লাহ আমাদের এতকিছু দিয়েছে, এতে বিগলিত হয়ে কৃতজ্ঞচিত্তে ক্ষমা প্রার্থনা করি। সৃষ্টিকর্তা সর্বমুহূর্তে মানুষের কল্যাণই চান। আমরা কল্যাণের পথে থাকবো, রমজানে এটাই সবার প্রতিজ্ঞা হোক।
এসএ/